আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের সবচেয়ে ধনী রাজ্য মহারাষ্ট্র। ২০২৩ সালে এ রাজ্যের বিভিন্ন গ্রামগুলোতে আত্মহত্যা করেছেন কমপক্ষে ২৮৫১ জন কৃষক। এ সংখ্যা ২০২২ সালের চেয়ে কম হলেও ২০২১ সালের তুলনায় বেশি।
আরও পড়ুন: গাজায় গণকবরের সন্ধান, ৪৯ লাশ উদ্ধার
রাজ্যের বিদর্ভ জেলায় (১৪৩৯ জন) সর্বোচ্চ কৃষক আত্মাহুতির ঘটনা ঘটেছে। দ্বিতীয় স্থনে রয়েছে মারাঠাওয়াড়া জেলা (১৮৮ জন)। তৃতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে- অমরাবতী জেলা (৩১৮ জন), যাবৎমল (৩০২ জন), বুলধানা (২৯২ জন), বিড় (২৬৯ জন), ছত্রপতি শম্ভুজিনগর (১৮২ জন) এবং জলগাঁও (১৫১ জন)।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের রাজধানী মুম্বাইয়ের হাইকোর্ট (আওরঙ্গাবাদ হাইকোর্ট) রাজ্যের কৃষকদের পরিস্থিতি জানতে চেয়ে প্রতিবেদন তলব করে। আদেশ মেনে তা জমা দিয়েছে মহারাষ্ট্র রাজ্য সরকারের ত্রাণ ও পুনর্বাসন মন্ত্রণালয়। সেই প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়।
আরও পড়ুন: মে মাসে ৮ দিনেই বজ্রপাতে ৪৩ মৃত্যু
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন পুলিশ স্টেশন থেকে সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে এ সংখ্যা উল্লেখ করা হয়েছে। তবে বাস্তবে তা আরও বেশিও হতে পারে।
আত্মহত্যাকারীদের ৯৬ শতাংশই আর্থিক অনটন ও ঋণের কিস্তি পরিশোধ করতে না পেরে নিজেকে শেষ করার পথ বেছে নিয়েছেন। বাকি ৪ শতাংশ ব্যক্তিগত ও অন্যান্য কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন।
উল্লেখ্য, মহারাষ্ট্রে প্রতিবছর হাজারো কৃষকের আত্মহত্যা প্রায় নিয়মিত ঘটনা। রাজ্য সরকারের তথ্যমতে, ২০২২ সালের মহারাষ্ট্রে আত্মহত্যা করেছিলেন ২৯৪২ জন কৃষক। তার আগের বছর আত্মহত্যা করেছিলেন ২৭৪৩ জন।
আরও পড়ুন: ফিলিস্তিনে গণহত্যা বন্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ
মহারাষ্ট্রকে ভারতের পেঁয়াজের রাজধানী বলা হয়। প্রতিবছর দেশটিতে যে পরিমাণ পেঁয়াজ উৎপন্ন হয়, তার ৬৫-৭০ শতাংশ আসে এ রাজ্যের বিভিন্ন গ্রাম থেকে। পেঁয়াজ ছাড়া অন্যান্য ফসলও উৎপাদন করে মহারাষ্ট্র।
আবার কৃষকদের বড় অংশই দরিদ্র ও কৃষকদের আত্মহত্যা করার প্রবণতাও এ রাজ্যেই বেশি। মহারাষ্ট্রের কৃষক নেতা কিশোর তিওয়ারি এ জন্য রাজ্য সরকারকে সরাসরি দায়ী করেছেন।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়াকে তিনি বলেন, খরা ও ঝড়-বৃষ্টির কারণে ফসল নষ্ট হওয়া এ রাজ্যে প্রায় নিয়মিত ঘটনা। ফসল নষ্ট হলেও ঋণের কিস্তি জমা দেয়ার চাপ থাকে।
আরও পড়ুন: ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া’র প্রয়াণ
এতে অনেক সময় সর্বস্ব বিক্রি করেও সেই কিস্তি জমা দেয়া সম্ভব হয় না। ফলে আত্মহত্যা ছাড়া কৃষকের সামনে আর কোনো উপায় থাকে না।
মহারাষ্ট্রের কোনো রাজ্য সরকার আজ পর্যন্ত সত্যিকার অর্থে কৃষকদের কল্যাণে কোনো পরিকল্পনা নেয়নি। নিলেও খুবই অদক্ষ ও ত্রুটিপূর্ণভাবে তা বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
গত ২ বছর আগে কৃষকদের ওপর ঋণের বোঝা কমাতে বিশেষ অর্থনৈতিক কর্মসূচি লোন ওয়েইভার স্কিম নেয় সরকার। তবে সেই প্রকল্পে অনেক কৃষকের নাম নথিভুক্ত করা হয়নি। ফলে রাজ্যের বহু কৃষক এ প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন না। সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া
সান নিউজ/এনজে