আন্তর্জাতিক ডেস্ক: গত ১৩ এপ্রিল ইসরায়েলের ওপর প্রতিশোধমূলক হামলা চালানোর পর থেকে বিশ্ব নেতাদের নিন্দার মুখে পড়েছে ইরান। এখন পর্যন্ত পাল্টা হামলা থেকে রেহাই পেলেও আন্তর্জাতিক স্তরে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ এড়াতে পারছে না দেশটি।
আরও পড়ুন: ভারতে ৭ দফার লোকসভা নির্বাচন শুরু কাল
বুধবার (১৭ এপ্রিল) ইরানের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা চাপানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) শীর্ষ নেতারা। ফলে দেশটির ড্রোন ও মিসাইল কোম্পানিগুলোর কার্যকলাপ চাপের মুখে পড়বে।
এদিকে শিল্পোন্নত দেশগুলোর গোষ্ঠী জি-সেভেনও ইরানের অস্ত্র সরবরাহকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়ার প্রস্তাব বিবেচনা করছে।
ইরানের হামলার নিন্দা করে ও ইসরায়েলের নিরাপত্তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে সব পক্ষের উদ্দেশ্যে উত্তেজনা কমানোর আহ্বান জানিয়েছে ইইউ।
এ বিষয়ে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস বলেছেন, ইরানের ওপর বড় আকারে ইসরায়েলের পাল্টা হামলা না চালানো জরুরি।
আরও পড়ুন: ইরানকে উত্তেজনা প্রশমনের আহ্বান চীনের
জার্মান রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন আন্তর্জাতিক সম্প্রচারকারী সংস্থা ডয়চে ভেলে এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
সম্প্রচারকারী সংস্থা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলো ইরানের বিরুদ্ধে নতুন পদক্ষেপের মাধ্যমে ইসরায়েলের সংযমের আশা করছে।
তবে বিশ্ববাজারে পেট্রোলিয়ামের মূল্য স্থিতিশীল রাখতে আপাতত ইরানের তেল রফতানির পথে কোনো বাধা সৃষ্টি করতে চায় না পশ্চিমা দেশগুলো। এতে চীনও রুষ্ট হতে পারে।
ইসরায়েলের ওপর হামলা ছাড়াও চলমান ইউক্রেন যুদ্ধে ইরান যেভাবে হামলাকারী দেশ রাশিয়াকে ড্রোন সরবরাহ করে চলেছে, ইইউ তার পথে বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। একাধিক কর্মসূচির মাধ্যমে তা মোকাবিলার চেষ্টা চলছে।
আরও পড়ুন: ওমানে ভারী বৃষ্টিপাত ও বন্যায় নিহত ১৮
এবার এর আওতা বাড়িয়ে মিসাইল সরবরাহ ও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের ‘প্রক্সি’ শক্তিগুলোকে শাস্তিমূলক পদক্ষেপের আওতায় আনতে চায় ইইউ।
তবে দেশটির শক্তিশালী রেভোলিউশনরি গার্ড কর্পস বাহিনীকে নিষেধাজ্ঞার আওতায় আনার উদ্যোগ আইনি জটিলতার কারণে এখনো সফল হয়নি ২৭ দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জোটটি।
কোনো ইইউ সদস্য রাষ্ট্র ঐ বাহিনীর সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার প্রমাণ পেলে তবেই তা সম্ভব হবে বলে মনে করছেন শীর্ষ কর্মকর্তারা।
অবশ্য ইসরায়েলের ওপর পাল্টা হামলা না চালানোর চাপ থাকলেও দেশটি কতকাল সংযম দেখিয়ে যাবে, সে বিষয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
ইসরায়েল ও মার্কিন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ১৩ এপ্রিলের হামলার পর ইরানের ওপর পাল্টা হামলার পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত সরকার এ পরিকল্পনা কার্যকর করেনি।
আরও পড়ুন: এবার ইসরায়েলে হামলা চালাল লেবানন
ইসরায়েলের কান সম্প্রচার কেন্দ্র জানিয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার পর পূর্ব পরিকল্পিত পাল্টা হামলার পরিকল্পনা বাতিল করেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
মার্কিন সম্প্রচারকারী সংস্থা এবিসি নেটওয়ার্কের সূত্র অনুযায়ী, গত সপ্তাহে কমপক্ষে ২ রাত্রে ইরানের ওপর হামলার পরিকল্পনা ছিল।
তবে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু স্পষ্ট বলেছেন, ইসরায়েল একাই নিজস্ব সিদ্ধান্ত নেবে। আত্মরক্ষার জন্য যেকোনো পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত তার দেশ।
সান নিউজ/এনজে