নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিকে প্রয়োজন ছাড়া প্রসূতির সিজার বন্ধে জারি করা নীতিমালাগুলোকে আইনের অংশ হিসেবে ঘোষণা এর আলোকে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: মুজিব বায়োপিক প্রদর্শনীর উদ্বোধন
বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
এ সময় আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাস গুপ্ত।
রায় ঘোষণার পর ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম জানান, স্বাভাবিক প্রসবের ব্যাপক প্রচারণা ও অপ্রয়োজনীয় সিজার বন্ধের লক্ষ্যে নীতিমালাগুলো আগামী ৬ মাসের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচারণার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আরও পড়ুন: আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ আজ
এছাড়া আইনের অংশ হিসেবে ঘোষণা করার ফলে নীতিমালাগুলো মানতে এখন সবাই বাধ্য। এটি নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে হাইকোর্টের আরও একটি রায়।
গত বুধবার (১১ অক্টোবর) প্রয়োজন ছাড়া সিজার কার্যক্রম বন্ধে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষ হয়।
এর আগে ২০১৯ সালের ৩০ জুন অপ্রয়োজনে প্রসূতির সিজার কার্যক্রম রোধে নীতিমালা তৈরি করতে নির্দেশ দেন আদালত।
সেই সাথে সরকারি ও বেসরকারি ক্লিনিকে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান প্রতিরোধে কার্যকর তদারকি করতে বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
আরও পড়ুন: দিনাজপুরের পৌর মেয়রের কারাদণ্ড
জনস্বার্থে দায়ের করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
এ সময় ব্যারিস্টার রাশনা ইমাম বলেন, ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশনের মতে, সন্তান জন্মদানের ক্ষেত্রে শতকরা ১০-১৫ শতাংশের বেশি সিজার পদ্ধতি কোনো দেশেরই প্রয়োজনীয় হতে পারে না। বাংলাদেশে দেখা যাচ্ছে, এটি প্রায় ৩১ শতাংশ।
এটার হার বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ৮৩ শতাংশ, সরকারি হাসপাতালে ৩৫ শতাংশ এবং এনজিও হাসপাতালগুলোতে ৩৯ শতাংশ। এটি আসলে এলার্মিং রাইজ। এর বৃদ্ধি থামানোর জন্যই এ মামলা।
আরও পড়ুন: কেন্দ্রীয় কারাগারের হাজতির মৃত্যু
বিশ্বের মধ্যে চীনে সিজারের হার খুবই খারাপ অবস্থায় ছিল। দেখা যাচ্ছে, নতুন নীতিমালা প্রণয়ণের ফলে এটা কমেছে। ব্রাজিলেও একই ব্যাপার দেখতে পেলাম।
তিনি বলেন, গ্রামে-গঞ্জে যে প্রাইভেট হাসপাতালগুলো আছে, সেগুলো কোনো ধরনের সরকারি মনিটরিং ছাড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। তারা সিজারিয়ান সেকশন করে যাচ্ছে। এতে অনেকের অমানবিক মৃত্যুও ঘটছে।
বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের পক্ষে তাদের আইন উপদেষ্টা এস এম রেজাউল করিম এ বিষয়ে বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনযুক্ত করে এ রিটটি করেন।
আরও পড়ুন: ৭ অঞ্চলে বৃষ্টির সম্ভাবনা
২০১৯ সালের ২১ জুন বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জনানো হয়, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ‘সেভ দ্য চিলড্রেন’-এর মতে, বাংলাদেশে গত ২ বছরে শিশু জন্মের ক্ষেত্রে সিজারিয়ানের হার ৫১ শতাংশ বেড়েছে।
বিষয়টিকে অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার উল্লেখ করে বলা হয়, এতে সন্তান জন্মদানে বাবা-মায়েদের ব্যাপক পরিমাণে খরচের ভার বহন করতে হচ্ছে।
সান নিউজ/এনজে