আন্তর্জাতিক ডেস্ক: সম্প্রতি যুক্তরাজ্য জুড়ে ‘এরিস’ নামে করোনা ভাইরাসের একটি নতুন ভ্যারিয়েন্ট দ্রুত ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বেগ জানিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
আরও পড়ুন: চীনে বন্যায় আরও ১৪ জন নিহত
ভারতীয় বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে বলেছে, করোনা ভাইরাসের নতুন একটি রূপ যুক্তরাজ্য জুড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং এটি দেশের স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি করছে বলে জানিয়েছে ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি (ইউকেএইচএসএ)।
করোনা ভাইরাসের ইজি ৫.১ ভ্যারিয়েন্টটি ‘এরিস’ নামে পরিচিত এবং এটি করোনার আরেক রূপ ওমিক্রন থেকে এসেছে বলে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। জুলাই মাসে যুক্তরাজ্যে করোনার এই ধরনটি প্রথম শনাক্ত হয়।
আরও পড়ুন: সংসদে ফিরলেন রাহুল গান্ধী
যুক্তরাজ্যে কোভিডের নতুন আতঙ্ক হয়ে উঠছে নয়া ভ্যারিয়েন্ট এরিস উল্লেখ করে সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলেছে, গত ৩ জুলাই কোভিডের নতুন এই স্ট্রেনের খোঁজ পাওয়া যায়। বর্তমানে মোট কোভিড আক্রান্তের মধ্যে ১৪ শতাংশ ভাইরাসের এই ধরনে আক্রান্ত।
এরিস ব্রিটিশ প্রশাসনের উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে মূলত সংক্রমণের হারের জন্যে। কারণ মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে ভাইরাসে সংক্রমিতদের ১৪ শতাংশ নাগরিক এই ভ্যারিয়েন্টে আক্রান্ত হয়েছেন।
ইউরোপের এই দেশটিতে গত জুলাই মাসের শুরু থেকেই দ্রুত হারে বাড়তে শুরু করে ভাইরাসের সংক্রমণ, এমনটি জানিয়েছে সংবাদ মাধ্যম। প্রতি নয়জনের মধ্যে একজন করে এই রোগে আক্রান্ত হতে থাকে। এছাড়া কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা এখনও বাড়ছে এই দেশে।
আরও পড়ুন: তিউনিসিয়া নৌকাডুবি, নিখোঁজ ৫১
সম্প্রতি ৪৯৩৬ জন ফুসফুস সংক্রান্ত সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। বর্তমানে তাদের মধ্যে ৫.৪ শতাংশ কোভিডে আক্রান্ত। তাদের বিশেষ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্টের মতে, করোনার নতুন ধরন এরিসের ৫ টি সাধারণ উপসর্গ রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে- নাক দিয়ে পানি পড়া, মাথাব্যথা, ক্লান্তি, হাঁচি এবং গলা ব্যথা।
মনে হচ্ছে, এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং সাম্প্রতিককালে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি এবং হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যাও বেড়েছে।
আরও পড়ুন: সিরিয়ায় হামলা, ৪ সেনা নিহত
আমরা এই সপ্তাহের প্রতিবেদনে করোনার সংক্রমণের ঊর্ধ্বগতি দেখতে পাচ্ছি বলে জানিয়েছেন ইউকেএইচএসএ-এর ইমিউনাইজেশন প্রধান ড. মেরি রামসে।
এছাড়া বিশেষ করে বয়স্ক ব্যক্তিদের মধ্যে হাসপাতালে ভর্তির হারও অল্প বৃদ্ধি পেতে দেখেছি। হাসপাতালে ভর্তির সামগ্রিক পরিমাণ এখনও অত্যন্ত কম এবং বর্তমানে আইসিইউতে ভর্তি বাড়ছে এমন চিত্র দেখতে পাচ্ছি না।
করোনার নতুন সংক্রমণ বাড়তে থাকায় তারা ঘনিষ্ঠভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ইসরাইলি হামলায় ৩ ফিলিস্তিনি নিহত
যদিও ভ্যাকসিন নেওয়া থাকলে এবং অতীতে ভাইরাসে সংক্রমিত হলে মানুষ আরও ভালো সুরক্ষিত থাকে, তারপরও ভাইরাস মোকাবিলায় জারি করা বিধিনিষেধগুলো শিথিল করা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস।
স্কাই নিউজ এক প্রতিবেদনে গেব্রেইয়েসুসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছে, উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা লোকদের জনাকীর্ণ জায়গায় মাস্ক পরার পরামর্শ দিচ্ছে ডব্লিউএইচও।
আরও পড়ুন: মরক্কোতে সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ২৪
এছাড়া সময় হলে টিকার বুস্টার ডোজ নিয়ে নিতে এবং বাড়ির ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল নিশ্চিত করার জন্যও আমরা আহ্বান জানাচ্ছি।
টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস জানান, করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ইতোপূর্বে জারি করা বিধিনিষেধগুলো বাতিল বা শিথিল না করতেও দেশগুলোর কাছে ডব্লিউএইচও অনুরোধ করছে।
সান নিউজ/এনজে/এইচএন