হারুন উর রশিদ সোহেল, রংপুর থেকে:
রংপুর নগরীসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় ব্যাঙের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। স্বাস্থ্য বিভাগের টোকেন আর ট্রেড লাইসেন্সের বলে অবৈধভাবে চলছেই তাদের জমজমাট ব্যবসা।
মানুষজনের অভিযোগ, এসব হাসপাতাল-ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে প্রতিনিয়তই হয়রানি-প্রতারিত হচ্ছেন তারা। অপচিকিৎসার শিকারও হয়েছেন অনেকই। আবার অনেক রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।
বিভাগে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের সংখ্যা নিয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য নেই বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরে। গত তিন বছর ধরে কোনো বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নতুন লাইসেন্স না দেওয়া ও চলমানগুলোর লাইসেন্স নবায়ন না হওয়ায় অবৈধের খড়গ মাথায় নিয়ে কাজ করছে কয়েকশ’ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরকারি হাসপাতালগুলোতেও জনবল সংকটসহ নানা কারণে সেবাগ্রহীতারা প্রয়োজনীয় কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তর জানায়, রংপুর বিভাগে দুটি সরকারি মেডিকেল কলেজ রয়েছে। এর একটি রংপুরে, অন্যটি দিনাজপুরে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল রয়েছে ৫০টি। জেলা শহরগুলোতে ২৫০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে সাতটি। তবে প্রত্যেক হাসপাতালেই রয়েছে জনবল সংকট। ১০ শয্যার হাসপাতাল রয়েছে দুটি। এছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে প্রায় এক হাজার ৮০০টি।
তবে রংপুর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, নগরীসহ বিভাগের আট জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৬০০টি বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। এর অর্ধেকই হচ্ছে রংপুর নগরীতে। এর পরের অবস্থানে রয়েছে দিনাজপুর। এছাড়া লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, গাইবান্ধা, পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ে গড়ে ২৫ থেকে ৩০টি ক্লিনিক রয়েছে। তবে সমিতিভুক্ত রয়েছে মাত্র ৫৮টি। অনলাইনে আবেদনের পর স্বাস্থ্য বিভাগের একটি টোকেন ও ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করছেন ক্লিনিক মালিকরা।
সমিতির সভাপতি শামছুর রহমান কোয়েল বলেন, ২০১৮ সাল থেকে রংপুর স্বাস্থ্য বিভাগ বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের কোনো লাইসেন্স দেয়নি। এমনকি নবায়নও করেনি। ফলে তিন বছর ধরে স্বাস্থ্য বিভাগের শুধু একটি টোকেনের মাধ্যমে ব্যবসা পরিচালনা করছেন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা।
রংপুর সিভিল সার্জন ডা. হিরম্ব কুমার রায় বলেন, নগরীতে মাত্র ২২৯টি বেসরকারি ক্লিনিক, হাসপাতাল ও ডায়গনস্টিক সেন্টারের অনুমোদন থাকলেও আছে সাড়ে তিনশতাধিক।
রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. আমিন আহমেদ খান বলেন, বিভাগে কতোগুলো সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে, সে বিষয়ে তার পিএসএস বলতে পারবেন। পরে পিএস রুহুল আমিন বলেন, তার কাছে বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকের পরিসংখ্যান নেই।
সান নিউজ/ এআর