নিজস্ব প্রতিবেদক:
বরিশাল: বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেছেন ফকির বাড়ি রোডের মাতৃছায়া শিশুকাননের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক সুজিত কুমার দেবনাথ। অভিযোগের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে বাসদ।
বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে ডা. মনীষার করোনা চিকিৎসায় অস্থায়ী ক্যাম্প সরিয়ে নিতে সুজিত কুমার দেবনাথ রোববার (২৬ জুলাই) বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় অভিযোগটি করেন। অভিযোগের প্রতিবাদে বিকেলে ফকির বাড়ি রোডের অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বাসদ। জেলা শাখার আহবায়ক প্রকৌশলী ইমরান হাবিব রুমন বলেন, ‘এটি মূলত ষড়যন্ত্রের অংশ। আমাদের জনসেবায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল সংঘবদ্ধভাবে এই কাজ করছেন। তারা চাচ্ছেন, আমাদের এখান থেকে নামিয়ে দিতে। তাতে করোনায় মানবসেবা বিঘ্ন হবে। রাজনৈতিকভাবে সেই সুবিধাটা নিতে পারবেন।’
রুমন দাবি করেন, ‘গত জুন মাসে সুজিত কুমার দেবনাথ মাতৃছায়া শিশুকানন আপতত বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আমাদের চারটি কক্ষ ব্যবহারের অনুমতি দেন। বিনিময়ে ভাড়া বাবদ পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম এবং ৩৫ হাজার টাকা মাসিক ভাড়া দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আমরা তার কাছ থেকে রুম ভাড়া নিতে অপারগতা প্রকাশ করি। কারণ, ওই ভবনের মূল মালিক সুজিত দেবনাথ নন। মূল মালিক হাসান ইমাম চৌধুরীর মেয়ের সঙ্গে আমাদের আলাপ হয়েছে। তিনি সুজিত দেবনাথের কাছে স্কুল ভাড়া দিয়েছেন, কিন্তু স্কুলের কক্ষ কারও কাছে ভাড়া দেওয়ার অনুমতি দেননি।’
ইমরান হাবিব রুমন ভবন মালিক হাসান ইমাম চৌধুরীর স্বজনদের বরাত দিয়ে জানান, সুজিত দেবনাথের সঙ্গে হাসান ইমামের যে চুক্তি হয়েছিল তা ২০১৭ সালে মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে। তারপর নতুন কােনো চুক্তি হয়নি। ফলে ওই ভবনের ভাড়া দেওয়ার এখতিয়ার ভাড়াটিয়া সুজিত দেবনাথের নেই।
তবে মাতৃছায়া শিশুকাননের পরিচালক সুজিত কুমার দেবনাথ অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, বাসদের জেলা শাখার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী শিশুদের বিজ্ঞান শেখাতে ‘বিজ্ঞান আন্দোলন মঞ্চ’ এর জন্য মৌখিকভাবে ভাড়া নেন। গত ১৮ মার্চ ডা. মনীষা চক্রবর্তী কোভিড-১৯ এর ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনায় বিদ্যালয়টির চারটি কক্ষ ও তার সামনের প্রাঙ্গন ব্যবহারের অনুমতি চাইলে মানবিক দিক বিবেচনা করে অনুমতি দেন তিনি। অথচ ডা. মনীষা চত্রবর্তী বিদ্যালয় প্রাঙ্গনে ‘মানবতার বাজার’ খোলেন এবং ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম করেন।
ঈদ-উল-ফিতরের পর ওই কার্যক্রম না চলায় বিদ্যালয় ত্যাগ করতে বলা হলে মনীষা চক্রবর্তী ত্যাগ করেননি। জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে কয়েকটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে এসে করোনা রোগীদের অস্থায়ী ক্যাম্প কার্যক্রম শুরু করা হয়। এ কার্যক্রম চালাতে তিনি বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস ব্যবহারের কোনো অনুমতি দেননি।
অভিযোগে তিনি আরও উল্লেখ করেন, করোনা রোগী বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স, ব্যবহৃত পিপিই, মাস্ক, পোষাক, অক্সিজেন সিলিন্ডার ইত্যাদি স্কুলের যেখানে সেখানে ফেলে রাখা এবং করোনায় ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ধোয়াসহ স্কুলের শিক্ষার্থীদের টয়লেট ব্যবহার করেন স্বেচ্ছাসেবীরা। মনীষা চক্রবর্তীকে এইসব কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকতে বার বার অনুরোধ করা হলেও তিনি শোনেননি।
সুজিত দেবনাথ দাবি করেন, করোনাকালে জনসেবার নামে মনীষা চক্রবর্তীর এই কর্মকাণ্ডে জনমনে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করবে। তিনি মনীষা চক্রবর্তীর কার্যক্রম থেকে রক্ষা পেতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ করেন।
সান নিউজ/ এআর