নিজস্ব প্রতিনিধি:
ঝালকাঠি: নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সহকারী সার্জন ডা. টিপু সুলতানকে ফেসবুকে ঘ৯৫ মাক্স নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে কারণ দর্শানোর (শো’কজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
ওই চিকিৎসক তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে ঘ৯৫ মাক্স সরবরাহে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলেছিলেন, যা ব্যবহারে চিকিৎসক ও নার্সরা করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। তিনি নিজেই গত ২ জুলাই আক্রান্ত হয়েছিলেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শিউলী পারভীন কারণ দর্শানোর চিঠিতে সহকারী সার্জন ডা. টিপু সুলতানকে বলেন, ‘আপনি প্রায়ই সরকারের স্বাস্থ্য বিভাগের কার্যক্রমকে ভিন্নরুপে উপস্থাপন ও উপহাস করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। ফেসবুক পোস্টগুলো নাগরিকত্ব এবং সরকারি কর্মচারীদের আচরণবিধির লঙ্ঘন, যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধরনের ফেসবুক কার্যকলাপ করে আপনি সরকারি কর্মচারীদের (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধি-২০১ ২০১৮ লঙ্ঘন করেছেন। আপনি প্রায়ই সরকারের কার্যক্রম নিয়ে বিভ্রান্তির কথা শেয়ার করছেন।’
নলছিটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক কর্মকর্তা ডা. মুনিবুর রহমান জুয়েল বলেন, তিনি একজন সরকারি ডাক্তার হিসেবে বিধি লঙ্ঘন করেছেন। কিছুদিন আগে তিনি নিজেও করোনায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। তার হয়তো আবেগে কিছু কথা বলেছিলেন। সে কারণেই উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। তবে সরকারি চাকরি বিধিমালায় সরকারের কোনো কার্যক্রম নিয়ে বিভ্রান্তি বা আপত্তিকর কিছু বলতে পারবেন না। তিনি তার ভুল বুঝতে পেরেছেন। তিনি লিখিত মুচলেকা দিতে রাজি হয়েছেন।
বাংলাদেশ ডাক্তার ফাউন্ডেশনের প্রধান প্রশাসক ডা. নিরুপম দাস বলেন, ‘ডা সুলতানকে নোটিশ করা হয়েছে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধি ২০১/২০১৮ অনুসারে। সেখানে বলা হয়েছে, যার ভিত্তিতে একজন সরকারি কর্মচারিকে দণ্ড দেওয়া যেতে পারে, সেগুলো হলো- দায়িত্বে অবহেলা, আদেশ অগ্রাহ্য করা, অসততা, মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করা, দুর্নীতি, নির্বাসন এবং সন্ত্রাসবাদ- যার কোনো কিছুই এখানে উল্লেখ করা হয়নি। আমরা ডা. সুলতানের ফেসবুকে ঘেটে সরকারের বিরুদ্ধে তার কর্মকাণ্ড দেখিনি। এ জাতীয় কিছু শেয়ার করতে বিধিমালা থাকতে পারে। তবে মতপ্রকাশের অধিকার সবার রয়েছে।’
ডা. টিপু সুলতান বলেন, ‘গত মার্চ মাস থেকে কোনো ছুটি পাইনি। হাসপাতালে করোনা ওয়ার্ড থেকে শুরু করে সব জায়গায় দায়িত্ব পালন করছি। এখন পর্যন্ত আমরা সরকারিভাবে ঘ৯৫ মাক্স পাইনি। অনেকেই নিজ থেকে সংগ্রহ ও ব্যবহার করছেন। আমি নিজেও আক্রান্ত হয়েছিলাম। আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। আমার ফেসবুকে লেখা হয়নি। আমি নিজেও এখন বিব্রতবোধ করছি।’
সান নিউজ/ এআর