রহমত উল্লাহ, টেকনাফ: স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা ১২ লাখ রোহিঙ্গাদের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছি। এদের কারণে স্থানীয় জনগণ চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আমরা পর্যাপ্ত পরিমাণ চেষ্টা করছি।
করোনা দুর্যোগের সময় করোনার চিকিৎসা সেবা দিয়ে বাংলাদেশ বিশ্বের রোল মডেল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। বাংলাদেশ দেশের মতো কম দেশই পারছে এরকম।
রোববার কক্সবাজারের টেকনাফে নির্মাণাধীন ১২টি ক্লিনিক উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের যৌথ প্রচেষ্টায় আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) এসব কমিউনিটি ক্লিনিক নির্মাণ করছে।
মন্ত্রী বলেন, করোনার শুরু থেকে সরকার স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি বৃদ্ধি করেছে এবং দেশব্যাপী কোভিড-১৯ টিকা প্রদান কার্যক্রম শুরু করে সেটি অব্যাহত রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশে স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। ফলে দেশের শেষ সীমান্ত কক্সবাজারের টেকনাফে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে যাচ্ছে। দেশের প্রতিটি হাসপাতালে স্বাস্থ্যসেবার মান বৃদ্ধি পেয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের দরিদ্র জনগোষ্ঠীও স্বাস্থ্যসেবা পাচ্ছে।
রোহিঙ্গা শরনার্থীদের কারণে টেকনাফের মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় প্রভাব পড়েছে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে প্রধানন্ত্রী রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছেন। তবে এটা সত্য রোহিঙ্গাদের কারণে এ অঞ্চলের মানুষের নিরাপত্তা-স্বাস্থ্যবেসায় ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। তাই এখানকার মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা দিতে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতে কমিউনিটি ক্লিনিকের সংখ্যাও এখানে বাড়ানো হয়েছে।
আইওএম বাংলাদেশ মিশনের প্রধান আব্দুস সাত্তার এসওয়েভ বলেন, শরণার্থী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নানামুখী চাহিদা পূরণে তাৎক্ষণিক এবং দীর্ঘমেয়াদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা ও উন্নয়ন সংস্থাগুলোর মধ্যে শক্তিশালী অংশীদারিত্বের প্রয়োজন। মানবিক-উন্নয়ন সম্পর্কের ফলাফল যে দীর্ঘস্থায়ী হয়, তারই উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বাংলাদেশ সরকার, বিশ্বব্যাংক ও আইওএমের এই যৌথ প্রচেষ্টা।
বাংলাদেশ ও ভুটানের জন্য বিশ্বব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ডান্ডান চেন বলেন, আমরা মানবিক সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা, উন্নয়ন সহযোগী এবং বেসরকারি সংস্থাগুলোর সাথে নিবিড়ভাবে কাজ করছি। বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গারা নিরাপদ, স্বেচ্ছায় ও মর্যাদাপূর্ণভাবে তাদের দেশে প্রত্যাবর্তন না করা পর্যন্ত এবং স্থানীয় জনগোষ্ঠীর প্রয়োজন মেটাতে বিশ্বব্যাংক কাজ করছে। এজন্য আইওএমসহ অন্যান্য সংস্থাগুলোকেও বরাদ্দ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।
এসময় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মু. আনোয়ার হোসেন, অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা অনুবিভাগ) ও লাইন ডিরেক্টর (এইচজিএসপি অপারেশন প্ল্যান) জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খোরশেদ আলাম, জেলা সিভিল সার্জন ডা. মাহবুবুর রহমান, জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ, উপজেলার চেয়ারম্যান নুরুল আলম এবং উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. টিটু চন্দ্র শীল প্রমুখ।
সান নিউজ/এনকে