এহসানুল হক, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ): ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলায় হঠাৎ করে বেড়েছে চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও দেখা গেছে রোগীদের আনাগোনা। কনজাংটিভাইটস বা চোখ ওঠা রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকেও চোখ ওঠা রোগী আসছে সেবা নিতে।
আরও পড়ুন: আয়ারল্যান্ডকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশ
গত এক সপ্তাহ ধরে উপজেলায় চোখের সমস্যা দেখা দিয়েছে আশংকাজনক হারে। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, চোখ ওঠার কারণে অনেক শিক্ষার্থী ক্লাসে অনুপস্থিত।
অনেকের চোখ মুখ ফুলে যাচ্ছে। বাদ যাচ্ছে না শিশু, ছাত্র, যুবক ও বৃদ্ধারাও। এতে করে দেখা দিয়েছে জনজীবনে দুর্ভোগ ভোগান্তি। অনেকে বাড়িতে বিশ্রাম নিচ্ছেন,আবার শ্রমজীবি ও দিন খেটে খাওয়া মানুষগুলো কাজের সন্ধানে যাচ্ছেন ঘরের বাইরে।
জানা গেছে, চোখের সমস্যার কারণে তারা তাদের নিত্য কাজ কর্ম করতে পারছেন না। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে অনেক সাধারণ মানুষকে বাহিরে ঘুরে ফেরা করতে দেখা যায়। একে বলা হয় কনজাংটিভাইটিস বা চোখের আবরণ কনজাংটিভার প্রদাহ। সমস্যাটি চোখ ওঠা নামেই পরিচিত। রোগটি ছোঁয়াচে। ফলে দ্রুত অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও আক্রান্ত রোগীদের সূত্রে জানা যায়, কনজাংটিভাইটিসের লক্ষণ হলো চোখের নিচের অংশ লাল হয়ে যাওয়া, চোখে ব্যথা,খচখচ করা বা অস্বস্তি।প্রথমে এক চোখ আক্রান্ত হয়, তারপর অন্য চোখে ছড়িয়ে পড়ে। এ রোগে চোখ থেকে পানি পড়তে থাকে। চোখের নিচের অংশ ফুলে ও লাল হয়ে যায়। চোখ জ্বলে ও চুলকাতে থাকে।
আরও পড়ুন: ইরানে পাল্টা বিক্ষোভ মিছিল
আলোয় চোখে আরও অস্বস্তি হয়। কনজাংটিভাইটিস রোগটি আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শ থেকে ছড়ায়। রোগীর ব্যবহার্য রুমাল, তোয়ালে,বালিশ অন্যরা ব্যবহার করলে এতে আক্রান্ত হয়। এ ছাড়া কনজাংটিভাইটিসের জন্য দায়ী ভাইরাস বাতাসের মাধ্যমেও ছড়ায়। আক্রান্ত ব্যক্তির আশপাশে যারা থাকে, তারাও এ রোগে আক্রান্ত হয়।
উপজেলার পৌর এলাকার কাকন হাটি গ্রামের বাসিন্দা ফয়সাল জানান, চোখ ওঠা রোগটি এখন মহামারী আকারে দেখা দিয়েছে। কয়েকদিন যাবৎ আমিও এ রোগে ভোগতেছি। ঈশ্বরগঞ্জ সদর ইউনিয়নের হাটুলিয়া গ্রামের ফরিদ মিয়া বলেন, হঠাৎ আমি চোখ উঠা রোগে আক্রান্ত হই।
পরে আমার পরিবারের অন্য সদস্যরা একই রোগে আক্রান্ত হয়। উপজেলার বিভিন্ন স্থানে মানুষকে চোখে কালো চশমা পড়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে।বিভিন্ন বয়সের মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. নূরুল হুদা খান জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কনজাংটিভাইটস বা চোখ ওঠা রোগী বেড়েছে, তবে এতো বেশি নয়। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, এ রোগ থেকে রক্ষা পেতে হলে সবসময় হাত,চোখ পরিষ্কার রাখতে হবে।চোখকে ধুলাবালি থেকে মুক্ত রাখতে হবে। হ্যান্ড স্যানিটাইজার, টিস্যু সাথে রাখতে হবে।আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা পরিহার করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।তবে সাধারণত ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে উপসর্গগুলো কমে আসে।
সান নিউজ/এনকে