বায়ুদূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে এক লাখ ২২ হাজার ৪০০ মানুষ মারা যায়। একই সাথে বাড়ছে শারীরিক ও মানসিক বিকলাঙ্গ শিশু জন্ম নেয়ার সংখ্যা।
এমন তথ্য জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থা হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট। তাদের তথ্যমতে, বায়ুদূষণের কারণে প্রায় প্রত্যেকেই নানারকম শারীরিক ও মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ কারণে নির্বোধ বিকলাঙ্গ জাতিতে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা বয়েছে। গতমাসে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘নগরের প্রবীণ এবং শিশুদের ওপর বায়ুদূষণের প্রভাব রোধে করণীয়’ শীর্ষক নাগরিক সংলাপে বক্তারা এ সব তথ্য জানান। পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) ও বারসিক এই নাগরিক সংলাপে আয়োজন করে।
গত এক বছরে রাজধানীতে বায়ুদূষণের পরিমাণ বেড়েছে ২০ ভাগ। স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্র- কেপস এর গবেষণায় এ তথ্য উঠে্ এসেছে।
গবেষণার তথ্য অনুসারে, ২০১৮ সালের নভেম্বর থেকে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত ঢাকা শহরের মানুষ মাত্র ৯ দিন ভালো বায়ু সেবন করেছে। ১৮৮ দিন মধ্যম থেকে সতর্কতামূলক দূষিত বায়ু , ১০৭ দিন অস্বাস্থ্যকর, ৮২ দিন খুব অস্বাস্থ্যকর এবং পাঁচ দিন মারাত্মক অস্বাস্থ্যকর বায়ু সেবন করেছে রাজধানীবাসী।
সংলাপে বক্তারা জানান, ঢাকার বায়ুদূষণের জন্য ইটভাটা, সড়কের ধুলা, যানবাহন এবং বায়োগ্যাস পোড়ানোকে দায়ী করেন তারা। ঢাকার দূষণের ইটভাটা ৫৮ শতাংশ, সড়কের ধুলা ১৮ শতাংশ, যানবাহনের ধোঁয়া ১০ শতাংশ, বায়োগ্যাস পোড়ানো ৮ শতাংশ এবং অন্যান্য কারণ ৬ শতাংশ দায়ী।
সংলাপে আলোচকরা বলেন, বায়ু দূষণের কারণে রাজধানীর বাসিন্দারা ফুসফুসের ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, চর্মরোগ, হাঁপানি, যক্ষ্মা, যকৃতের সমস্যা ও নিউমোনিয়ার মতো নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে।
গত ছয় বছরে ঢাকার বায়ুমান পর্যালোচনার তথ্য উপস্থাপন করা হয়। এ সময়ের মধ্যে রাজধানী ঢাকার আদর্শ বায়ুমানের চেয়ে বায়ুদূষণ সব সময় চার থেকে ছয় গুণ বেশি ছিল। উচ্চমাত্রার বায়ুদূষণের কারণে মানসিক প্রতিবন্ধী শিশুর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বক্তারা। এছাড়া সম্ভাবনা বাড়ছে বিকলাঙ্গ শিশু জন্মের হার।
সংলাপে বায়ুদূষণ রোধে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে সরকারে প্রতি আহ্বান জানান বক্তারা। একই উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে ঢাকার আশপাশের ইটভাটাগুলো সরিয়ে ফেলতে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার তাগিদ দেন তারা।