নিজস্ব প্রতিবেদক:
ব্রাহ্মণবাড়িয়া: পাবনার ঈশ্বরদীতে অনুমোদনহীন মেডিকেয়ার ক্লিনিককে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা সংগ্রহের অনুমতি দিয়ে এখন সংকটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে, করোনা পরীক্ষার ভুয়া রিপোর্ট নিয়ে প্রতারণায় অভিযুক্ত ওই ক্লিনিককে ‘বিশ্বাস করে’ নমুনা সংগ্রহের অনুমতি দিয়েছিল বলে দাবি করে করেছে হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন হাসপাতালটির কর্মকর্তারা।
মেডিকেয়ার ক্লিনিকের সংগ্রহ করা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের ৫০ জন কর্মচারী-শ্রমিকের নমুনা পরীক্ষা করা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাবে। কিন্তু সরকারি অনুমোদন ছাড়া অবৈধ উপায়ে নমুনা সংগ্রহ ও ভুয়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে মেডিকেয়ার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মামলা হয় ঈশ্বরদীর থানায়।
ইতোমধ্যে ক্লিনিকটির মালিক আবদুল ওহাব রানাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ মামলায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চেয়ারম্যান ডা. মো. আবু সাঈদকেও অভিযুক্ত করা হয়।
করোনা পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ ও রিপোর্ট নিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগটির সংবাদ গণমাধ্যমেও প্রকাশিত হয়েছে।
এসব অভিযোগ ওঠার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে জানানো হয়, মাইক্রোবায়েলজি বিভাগের প্রধান পিসিআর (পলিমার চেইন রিঅ্যাকশন) ল্যাবের ইনচার্জ ডা. জাকিউর রহমান ও প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় গত ১১ জুলাই থেকে করোনার নমুনা সংগ্রহ বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু বুধবার (১৫ জুলাই) ফের নমুনা সংগ্রহ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।
তবে বৃহস্পতিবারের সংবাদ সম্মেলনে হাজির হয়ে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ডা. জাকিউর রহমান। বলেন, ‘আমাদের নমুনা আগেই পরীক্ষা করা হয়েছে। গত ৫ জুলাইয়ের নমুনা পরীক্ষায় নেগেটিভ আসায় আমরা এখন সুস্থ।’
তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অনুমোদনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আমাদেরকে সরবরাহ করা হবে মর্মে আমরা বিশ্বাস করে মেডিকেয়ার ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে নমুনা সংগ্রহের অনুমতি দিয়েছিলাম। গত ৬ জুলাই সংগৃহীত ৫০টি নমুনা দেওয়ার পরদিন আমাদেরকে কাগজপত্র সরবরাহ করার কথা ছিল। কিন্তু কাগজপত্র দিতে না পারায় আমরা তাদের কাছ থেকে আর কোনো নমুনা নেইনি।’
ডা. জাকিউর রহমান আরও বলেন, ‘৭ জুলাই ওই ৫০টি নমুনা পরীক্ষার রিপের্টের মধ্যে ৩৯টি নেগেটিভ এবং ১১টি পজিটিভ এসেছে। আমাদের ল্যাবে পরীক্ষিত রিপোর্টগুলোতে কোনো ভুল নেই। অ্যানালাইসিসহ এসব পরীক্ষার রিপোর্ট গ্রাফ পিসিআর মেশিনের মেমোরিতে সংরক্ষিত আছে।’
‘মামলায় আমাদের ল্যাবে পরীক্ষিত রিপোর্ট নিয়েও কোনো অভিযোগের কথা উল্লেখ করা হয়নি। গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন তাই মনগড়া ও মিথ্যা’ বলে দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শফিকুল ইসলাম, উপ-ব্যবস্থাপক আশাদুল্লাহ মিয়া, পিসিআর ল্যাব ইনচার্জ এস এম জুনায়েদ ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।
সান নিউজ/ এআর