সান নিউজ ডেস্ক : ইফতারের পর হাসপাতালে হার্ট অ্যাটাক নিয়ে ভর্তি হওয়ার হার অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। অনেকে হার্ট অ্যাটাকের ব্যাথা কে ভুল করে এসিডিটির পেইন মনে করে এন্টাসিড বা ইনো খেয়ে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে বা তীব্র বুকের ব্যাথা নিয়ে রমজান মাসে সন্ধ্যা বেলা ইফতারির পর চিকিৎসক এর চেম্বারে বা হাসপাতালেরর ইমারজেন্সী বিভাগে চলে আসেন। ইসিজি করার পর প্রতীয়মান হয় যে উনার হার্ট এটাক হয়েছে এবং ততক্ষণে জটিলতা বেড়ে যায়।
আরও পড়ুন: কাল নারায়ণগঞ্জে চার ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
বিশেষজ্ঞদের মতে,যেকোনো ভারী খাবার দাবারের পর হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। প্রচুর খাবার একসাথে গেলে সেগুলোকে সামাল দেয়ার জন্য পাকস্থলীকে তার কাজ অনেক বেশি বাড়িয়ে দিতে হয়। বেশি কাজ মানেই বেশি শক্তি। এই অতিরিক্ত শক্তির জন্য তার রক্তও দরকার হয় বেশি। কিন্তু এই রক্ত সে পাবে কই?
পাকস্থলীর মোটামোটি কাছের প্রতিবেশী যেহেতু হার্ট, তখন হার্টকে স্যাক্রিফায়েস করতে হয় বেশ খানিকটা রক্ত। আর ঠিক তখনই ঘটে যেতে পারে দুর্ঘটনা।
রোজায় সারাদিন না খেয়ে আমরা স্বাভাবিকভাবেই বেশ ক্ষুধার্ত থাকি। ব্রেইন বারবার সিগনাল পাঠাতে থাকে - খাবার দাও, খাবার দাও।
টেবিলে সাজানো সুস্বাদু সব খাবার আর ব্রেইনের সিগনালের ফাঁদে আমরা খুব সহজেই ধরা পড়ে যাই। গোগ্রাসে প্রচুর খাবার গিলতে থাকি।
তারপর আমাদের অজান্তেই শরীরের মধ্যে চলতে থাকে আন্তঃপ্রতিবেশী রক্ত আদান-প্রদান।
কখনো কখনো হজম প্রক্রিয়াকে তরান্বিত করতে শরীরের বিভিন্ন অর্গান বা অংগ থেকে পাকস্থলী বা স্টম্যাক এর দিকে রক্তের ডাইভারসন হয়, এর মাঝে হৃদপিন্ড বা হার্ট অন্যতম যেখানে রক্ত চলাচলে স্বল্পতা ঘটে।
ফলশ্রুতিতে ভারী খাবার দাবারের ২ ঘন্টার মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায় প্রায় চারগুণ।
তাই, ইফতারে খাবার কম খান। দরকার হলে অল্প অল্প করে ২/৩ বারে খান।
নিজের স্বজনদের খাবারের দিকেও খেয়াল রাখুন।
উল্লেখ্য, ৩০ থেকে ৪০ বছর বয়সের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বিশ্বব্যাপী দ্রুত বাড়ছে। তাই বয়স কম বলে নিশ্চিন্তে বসে থাকার অবকাশ নেই।
জন্মগত হৃদ্রোগ, রক্তনালির সংকোচন বা রক্তনালির রোগ, জিনগত ত্রুটি ইত্যাদি কম বয়সে হার্ট অ্যাটাকের কারণ হতে পারে। এ ছাড়া অল্প বয়সে মুটিয়ে যাওয়া, রক্তে চর্বির আধিক্য, কম বয়সে উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া, ধূমপানের অভ্যাস, মানসিক চাপ অল্প বয়সে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। অস্বাস্থ্যকর খাবারে আসক্তি, কায়িক পরিশ্রম একেবারেই না করা, রাত জাগা, মাদকাসক্তি ইত্যাদি তরুণ প্রজন্মের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়।
সাননিউজ/এমআরএস