পাবনা প্রতিনিধি: করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য গত ৭ মাস আগে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন পাবনার সুজানগর উপজেলার দম্পতি আব্দুর রাজ্জাক ও মোছা. হাসিনা খাতুন।
কিন্তু, তারা রেজিস্ট্রেশন করলেও ভ্যাকসিন নেননি। কিন্তু এরই মধ্যে পেয়ে গেছেন ভ্যাকসিনের সার্টিফিকেট।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) তারা রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট করেন। এতে দেখা যায়, তাদের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়ে গেছে। ভ্যাকসিন নেওয়ার তারিখও দেয়া।
অনেকটা অবাক হয়ে যান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তা দেখে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েন দায়িত্বরত কর্মকর্তারা।
ভ্যাকসিন না নিয়েও সার্টিফিকেট পাওয়া আব্দুর রাজ্জাক সুজানগর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের ভবানীপুর (কাঁচারীপাড়া) এলাকার মৃত বেলায়েত আলী প্রামাণিকের ছেলে এবং অপরজন হলেন আব্দুর রাজ্জাকের স্ত্রী মোছা. হাসিনা খাতুন।
করোনা সার্টিফিকেটে আব্দুর রাজ্জাকের ১ম ডোজ নেওয়ার তারিখ ০৯-০৮-২০২১ এবং ২য় ডোজ নেওয়ার তারিখ ০৯-১০-২০২১ উল্লেখ করা হয়েছে।
মোছা. হাসিনা খাতুনেরও প্রথম ডোজ নেওয়ার তারিখ ০৯-০৮-২০২১ এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার তারিখ ০৯-১০-২০২১ উল্লেখ করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভ্যাকসিন দিতে আসেন আব্দুর রাজ্জাক ও হাসিনা খাতুন।
আব্দুর রাজ্জাক জানান, গত বছরের আগস্ট মাসের ৭ তারিখ ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য আমি এবং আমার স্ত্রী রেজিস্ট্রেশন অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করি। মোবাইলেও ম্যাসেজ আসে।
কিন্তু পারিবারিক নানা ব্যস্ততার কারণে আমাদের ভ্যাকসিন নেওয়া হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট করতে গিয়ে দেখি আমাদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়ে গেছে। পরে কার্ডের নম্বর নিয়ে অনলাইনে গিয়ে দেখি, ভ্যাকসিন নেওয়ার সার্টিফিকেট এসেছে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবু তোহা মো. শাকিল সংবাদ মাধ্যমকে জানান, এ ধরনের ঘটনা একাধিক ব্যক্তির ক্ষেত্রেই ঘটেছে বলে আমি জানতে পেরেছি।
তিনি আরও জানান, এটি ওয়েবসাইটের সমস্যা। তবে এ ধরনের ঘটনা যাদের ক্ষেত্রে ঘটেছে তাদের রেজিস্ট্রেশন কার্ডে হাতে লিখে সংশোধন করে একই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা দেওয়া হবে।
পাবনার সিভিল সার্জন ডা. মনিসর চৌধুরী সংবাদ মাধ্যমকে জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জানালে সমাধানের ব্যবস্থা করা হবে। তারা সংশোধন করে টিকা নিতে পারবেন। তবে এ ধরনের ঘটনা ওয়েবসাইট জটিলতায় ঘটতে পারে।
প্রসঙ্গত, গত বছর ২০২১ সালে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিলো নোয়াখালীতে। করোনার টিকা গ্রহণ করেননি। তবে রেজিস্ট্রেশন করেছিলেন। দীর্ঘদিন পর টিকা গ্রহণের জন্য মোবাইলে আসা নাম্বার অনুযায়ী রেজিস্ট্রেশন কার্ড প্রিন্ট করেন।
তাতে দেখেন তার টিকা দেয়া হয়ে গেছে। আছে টিকা গ্রহণের তারিখ ও টিকা কোম্পানির নাম। অনেকটা অবাক হয়ে আসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। তা দেখে বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েন টিকা প্রদানের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা।
২০২১ সালের ৫ আগস্ট (বৃহস্পতিবার) সকালে ঘটনাটি ঘটে নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।
আরও পড়ুন: ১ মার্চ খুলছে প্রাথমিক বিদ্যালয়
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার নাজিম উদ্দিন জানান, ঘটনাটি আমি শুনেছি। এখন তাকে একই রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে টিকা দেয়ার জন্য বলেছি।
টিকা না দিয়ে সার্টিফিকেট পাওয়া লোকের নাম আহাম্মদ উল্যাহ (৬০)। তিনি হাতিয়ার তমরদ্দি ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের পূর্ব জোড়খালী গ্রামের আনোয়ার আহাম্মদের ছেলে।
তার টিকা গ্রহণের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার হলো ২০৭৫০৪৬০৪২৬১৩৩১১২৩। আর টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেটের নাম্বার হলো বিডি৭৫০৩৭২৬৯২৭৯৬।
সান নিউজ/ এইচএন