নিউজ ডেস্কঃ
করোনা আক্রান্ত রোগীকে ‘সরি’ বলে তার কাছ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিয়েছে ঢাকার আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল।
বুধবার (৩ জুন) সকালে সাইফুর রহমান নামের ওই রোগীকে ফোন করে হাসপাতালে যেতে বলা হয়। রোগীর ছোট ভাই আরিফুল ইসলাম সুমন যাওয়ার পর তাকে ১ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৫ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
তবে গত ৩১ মে সরকার নির্ধারিত ‘কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতাল’ তালিকা থেকে সরে আসায় ওই রোগীর কাছ থেকে ১ ও ২ জুনের বিল কেটে রেখেছে আনোয়ার খান মডার্ন কর্তৃপক্ষ।
গত ২৩ মে করোনা ধরা পড়ার পর আনোয়ার খান মডার্ন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন সাইফুর রহমান। মঙ্গলবার (২ জুন) ছাড়া পান তিনি। ১১ দিনে চিকিৎসার ব্যয় ধরা হয় ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা। বিল পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে বের হতে পারছিলেন না। গতকাল রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালে আটকে রাখা হয় তাকে। শেষমেশ অনেক অনুরোধ করে দেড় লাখ টাকা দিয়ে ছাড়া পান তিনি।
সাইফুর রহমান মঙ্গলবার রাতে জানান, ‘আমার কোনও অপারেশন হয়নি। আইসিইউতে ছিলাম না। অক্সিজেন নেওয়া লাগেনি। দুটি এক্সরে ও দুটি রক্ত পরীক্ষা করিয়েছে। কেবল নাপা ও গ্যাস্ট্রিকের ট্যাবলেট দেওয়া হয়েছে। বাকি ওষুধ বাইরে থেকে কিনেছি। অথচ বিল এসেছে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা!’
বুধবার (৩ জুন) রোগীর পরিবারকে টাকা ফেরত দিয়ে আনোয়ার খান মডার্ন কর্তৃপক্ষ বলে, ‘সবাইকে জানাবেন, আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। বিলটি এমন হওয়ার কথা ছিল না।’ পরিবারটিকে ‘সরি’ বলে দুই দিনের বিল রেখেছে তারা।
টাকা ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. ইহতেশামুল হক বলেন, ‘আমরা টাকা ফেরত দিয়েছি। এ সময় তিনি গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানান বিষয়টি সামনে আনার জন্য।
সাইফুর রহমানের বিলের কাগজে দেখা গেছে, ২ জুন পর্যন্ত চিকিৎসকের খরচ ধরা হয়েছে ১৮ হাজার ৭০০ টাকা, হাসপাতাল বিল ১ লাখ ১৪ হাজার ৫৭০ টাকা, ইনভেস্টিগেশন বিল ১৯ হাজার ৪৭৫ টাকা, ওষুধের বিল ৫ হাজার ২২৬ টাকা ৮৫ পয়সা, এর সঙ্গে সার্ভিস চার্জ ১২ হাজার ৯০৩ টাকা। সব মিলিয়ে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৪ টাকা ৮৫ পয়সা। মোট বিল আসে ১ লাখ ৭০ হাজার ৮৭৫ টাকা।'
প্রসঙ্গত সরকারের সঙ্গে কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল হিসেবে যে চুক্তি হয়েছিল, তা গত ৩১ মে থেকে বাতিল করা হয়েছে।
কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড হাসপাতালের তালিকা থেকে আনোয়ার খান মডার্নের বেরিয়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত সচিব মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ‘তারা আর থাকতে চাচ্ছে না। তবে গণমাধ্যম সচেতন ছিল বলেই রোগীর কাছ থেকে বেশি বিল রাখার একটা প্রতিকার হয়েছে।’