নিজস্ব প্রতিনিধি, যশোর: যশোরে করোনার রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বন্যার পানির মতো। কোনোভাবেই এই ¯্রােত কমানো যাচ্ছে না। জেলাটির জেনারেল হাসপাতালের ভিতরে জায়গা নেই। রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে রাস্তা, গাছতলায় এমনকি ডাস্টবিনের পাশে রেখে। আবার অনেকে যে ভ্যানে এসেছেন সেই ভ্যানের উপরেই চলছে চিকিৎসা। আবার জায়গা না পেয়ে চিকিৎসা না নিয়েই ফিরে যাচ্ছেন অনেকে।
যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়নের রাজু আহমেদ জানান, তার বৃদ্ধ চাচীকে নিয়ে ভ্যানযোগে সকাল সাড়ে ৯টায় হাসপাতালের জরুরি বিভাগে আসেন। ডাক্তার তাকে ইয়োলো জোনো পাঠালেও সেখানে কোনো জায়গা না থাকায় টানা তিন ঘণ্টা ওয়ার্ডের সামনে ভ্যানের উপরে রেখেই রোগীকে চিকিৎসা নিতে হয়।
সদর উপজেলার বাহাদুরপুর গ্রামের খালেদা পারভীন জানান, তার মাকে খোলো আকাশের নিচে ডাস্টবিনের সামনে রেখে চিকিৎসা করাতে বাধ্য হচ্ছেন।
অবশ্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আখতারুজ্জামান জানান, আইসোলেশন ওয়ার্ডে রোগীর চাপ সামলাতে ওয়ার্ডকে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। অতিরিক্ত রোগী নতুন ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। প্রয়োজনে বেড সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য কর্মকর্তা ডা. মো. রেহেনেওয়াজ জানান, গত চব্বিশ ঘণ্টায় হাসপাতালে করোনায় ৬ জন ও উপসর্গ নিয়ে আরও ৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে জেলায় ১ হাজার ২০ জনের নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে ৩৭৩ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় আক্রান্তের হার ৩৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ।
এই নিয়ে জেলায় মোট করোনা শনাক্ত হয়েছেন ১৪ হাজার ১৭০ জনের ও সুস্থ হয়েছেন ৮ হাজার ৪০৮ জন। আর জেলায় করোনায় মোট মারা গেছেন ১৮৭ জন।
যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, আড়াইশ শয্যার এই হাসপাতালে শুধু করোনা ওয়ার্ডেই বর্তমানে ভর্তি রয়েছেন ২৪৩ জন রোগী। শয্যা সংখ্যা বাড়িয়ে রোগী সংকুলানের ব্যবস্থা করা গেলেও চিকিৎসক ও নার্স সংকটে বাড়তি রোগীদের সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে।
সান নিউজ/এফএআর