চট্টগ্রাম ব্যূরো :
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয় করোনার টিকাদান কর্মসূচি। এর আওতায় চট্টগ্রামে টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন প্রায় চার লাখ মানুষ। কিন্তু টিকা সংকটে প্রায় এক লাখ মানুষ এখনও দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারেননি। তবে টিকা সংকট ছাড়াও এ জন্য ডিজি হেলথের সার্ভার জটিলতাকেও দায়ী করেছেন কেউ কেউ।
আর এই সার্ভার জটিলতার কারনে এখন মিলছে না সনদও। স্বাস্থ্যবিভাগ সূত্র বলছে, টিকা গ্রহীতাদের কোনো ডাটা এখনো সার্ভারে এন্ট্রিই হয়নি এখনো। ডাটা এন্ট্রি ছাড়া সনদ দেওয়া তো কোনোভাবেই সম্ভব না।
সার্ভার জটিলতার বিষয়টি স্বীকার করেছেন চট্টগ্রাম জেলা সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বিও। তিনি বলেন, টিকার প্রথম ডোজ নিয়েছেন চার লাখ মানুষ, দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন তিন লাখ। এরপর আরও টিকা আসছে। সব মিলে চট্টগ্রামে টিকা প্রদান করা হয়েছে ৮ লাখ। ৮ লাখের ডাটা এন্ট্রি করার জন্য নিয়োগপ্রাপ্ত মাত্র একজন। আমরা তার চাপ কমাতে কিছু স্বেচ্ছাসেবক দিয়েছি। ডাটা এন্ট্রি হচ্ছে। একটু দেরি হলেও সব টিকা গ্রহীতার ডাটা এন্ট্রি হবে।
নগরীর দামপাড়ার বাসিন্দা শাহনেওয়াজ। তিনি ১০ মার্চ টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করলেও ৫ জুলাই পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের ক্ষুদেবার্তা পাননি। তবে তিনি দুই মাস পূর্ণ হওয়ায় মে মাসের মাঝামাঝি চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন। তবে দ্বিতীয় ডোজ নিলেও সার্টিফিকেট পাননি। ৫ জুলাই পর্যন্ত তার দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণের ডাটাই এট্রি হয়নি সার্ভারে।
এপ্রিলে টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়ে তা সার্ভারভুক্ত না হওয়ার তালিকা আরও দীর্ঘ। নগরীর দামপাড়া নিবাসী শাহনেওয়াজ, জামালখান এলাকার বাসিন্দা রোকসানা, বহদ্দার হাট এলাকার নজরুল ইসলাম, নালাপাড়ার প্রকৌশলী জাকির হোসেন থেকে শুরু করে চট্টগ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। যারা বিভিন্ন প্রয়োজনে দেশের বাইরে যেতে পড়েছেন বিপাকে।
চট্টগ্রামের প্রবীণ চিকিৎসক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, ডাটা এন্টি সতর্কতার সাথে করতে হয়। আট লাখ টিকার ডাটা এন্টি কঠিন কাজ। শুরু থেকেই স্বাস্থ্য বিভাগকে বিষয়টি ভাবা দরকার ছিল। কারণ দেশ-বিদেশে ভ্রমণের জন্য টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়াও ডাটা অসম্পূর্ণ থাকলে সরকারের এমন উদ্যোগও পরিসংখ্যগতভাবে সঠিক প্রতিফলন ঘটবে না। আমরা পর্যাপ্ত জনবল নিয়োগ করে ডাটা এন্ট্রি দ্রুত শেষ করার দাবি জানাই।
তিনি বলেন, ভ্রমণে এখন করোনা টিকা গ্রহণের সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। করোনা টিকা গ্রহীতাদের ডাটা এট্রি না হওয়ায় কোভিড ১৯ নিয়ে গবেষণাও নির্ভুল হবে না বলে অভিমত সংশ্লিষ্টদের। তাই দ্রুত জনবল নিয়োগ করে টিকা গ্রহণের ডাটা এন্ট্রি নিশ্চিতের দাবি সংশ্লিষ্টদের।
সান নিউজ/ আইকে