নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশের (আইসিডিডিআর’বি) গবেষণায় পাওয়া গেছে ঢাকায় করোনাভাইরাস সংক্রমণে আক্রান্তদের ৬৮ শতাংশ নমুনায় ভারতীয় ডেল্টা ধরন (ভ্যারিয়েন্ট) রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) রাতে আইসিডিডিআর’বির জ্যেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোস্তাফিজুর রহমান গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, সম্প্রতি একটি গবেষণায় ৬০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে ৬৮ শতাংশ নমুনায় ভারতীয় ধরন পাওয়া গেছে। দুই মাসে ৬০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করে এ ফল পাওয়া গেছে। এছাড়া, ২২ শতাংশ দক্ষিণ আফ্রিকান ধরন পাওয়া গেছে। পাশাপাশি নাইজেরিয়া ধরনও পাওয়া গেছে।
সংক্রমণের হার কমানোর লক্ষ্যে এবং দেশে ভারতীয় ধরনসহ করোনার অন্যান্য ধরনের বিস্তার রোধে জনসাধারণকে সঠিকভাবে মাস্ক ব্যবহারের পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছে আইইডিসিআর।
এর আগে গত ৩০ মে স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছিল, দেশে করোনায় আক্রান্ত ১৪০ জনের দেহে বিদেশি ধরন শনাক্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ৮৫ জনের দক্ষিণ আফ্রিকান, ২৩ জনের ভারতীয়, ২৭ জনের ইউকে এবং পাঁচ জনের দেহে নাইজেরিয়ান ধরন পাওয়া গেছে।
আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. তাহমিনা শিরীন বলেন, করোনার ধরন কোনো নতুন বিষয় নয়। যত জিনোম সিকোয়েন্স করা হবে ততো নতুন ধরন শনাক্ত হবে। নতুন নতুন ধরনের আবির্ভাব হবে। ধরন যা-ই হোক না কেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে যতটুক সম্ভব ঘরের মধ্যে অবস্থান করতে হবে। ঘরের বাইরে বের হলে সঠিকভাবে মাস্ক পরতে হবে। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। টিকা নেওয়ার সময় এলে টিকা নিতে হবে।
কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় পরামর্শক কমিটির অন্যতম সদস্য ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, ঈদের পর থেকেই সীমান্তবর্তী এলাকায় সংক্রমণ বাড়ছে। তবে এ সংক্রমণ এখন সীমান্তবর্তী এলাকা ছেড়ে এখন অন্য জেলাতেও ছড়িয়ে পড়ছে। যেসব এলাকায় সংক্রমণ বেশি সেখানে কঠোর লকডাউন কার্যকর করতে হবে। লকডাউন মানে ওই এলাকার মানুষ পুরোপুরি ঘরবন্দি।
তিনি বলেন, রোগী শনাক্ত, আইসোলেশন ও কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে পারলে ওই এলাকার সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। আর যদি তাতে ব্যর্থতা দেখা যায়, তাহলে ওই সব এলাকায় সংক্রমণ তো বাড়বেই, পাশাপাশি বাড়বে মৃত্যুও। সেইসঙ্গে ওই সংক্রমণের ঢেউ ছড়িয়ে পড়বে দেশের সর্বত্র।
ঈদুল আজহার সময়ও যদি গাদাগাদি করে মানুষের চলাচল ও যাতায়াত অব্যাহত থাকে তাহলে করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
সাননিউজ /এএসএম