ইন্টারন্যাশনাল ডেস্ক:
করোনা মহামারির বেগতিক পরিস্থিতিতে আতঙ্কে রয়েছে গোটা বিশ্বের মানুষ। দেশে দেশে বাড়ছে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা, দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক বের না হওয়ায় পৃথিবী থেকে এ দুর্যোগ কবে কাটবে তাও জানা নেই।
এমন পরিস্থিতি তাই ক্রমশই মানুষকে অস্থিরতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে এরই মধ্যে বিরূপ প্রভাব দেখা দিয়েছে। মহামন্দার আশঙ্কাও দিন দিন বাড়ছে।
কোন চিকিৎসা না থাকায় করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার উপরই নির্ভর করতে হচ্ছে। আক্রান্ত মানুষের শরীর যাতে ভাইরাসটির বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে পারেন চিকিৎসকেরা সাধ্যমতো সেই চেষ্টাই করছেন।
তাতে কেউ জয়ী হচ্ছেন, আবার কেউ কেউ চিকিৎসকদের অসহায় চোখের সামনে পরাজিত হয়ে পরপারে পাড়ি দিচ্ছেন। এমন অবস্থায় করোনাভাইরাসটিকে চিনতে আর প্রতিষেধক তৈরিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা।
এমন সব গবেষণা থেকেই বের হয়ে আসছে ভাইরাসটির সব নতুন নতুন রূপ। গবেষকরা বলছেন, পাঁচ ধরনের মানুষ রয়েছেন যাদের করোনায় আক্রান্ত হওয়া এবং মারা যাওয়ার ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি।
মার্কিন সংস্থা সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) বলছে, সব ধরনের মানুষ করোনাভাইরাস অর্থাৎ কোভিড-১৯'এর ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে মৃতদের মধ্যে পাঁচটি ধরন দেখা গেছে।
সেগুলো হলো,
১. বয়স
গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ বছরের বেশি বয়স্কদের করোনায় মারা যাওয়ার হার সবচেয়ে বেশি। করোনা আক্রান্ত হলে অবস্থা গুরুতর হবে কিনা তা নির্ভর করে বয়সের ওপর।
২. লিঙ্গ
পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে গবেষকদের দাবি, নারীদের তুলনায় পুরুষের মৃত্যু হচ্ছে বেশি। যদিও এর কারণ এখনো জানতে পারেননি গবেষকরা। ইতালিতে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ হলেও মৃতদের মধ্যে পুরুষের শতাংশ ৬৮। গ্রিসে জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ পুরুষ হলেও করোনায় মৃতদের ৭২ শতাংশ পুরুষ।
৩. শারীরিকভাবে দুর্বল
যারা শারীরিকভাবে দুর্বল বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসে সমস্যা, হজমের সমস্যায় ভুগছেন তাদের মৃত্যু হার বেশি। নিউ ইংল্যান্ড জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, উহান শহরে প্রথম এক হাজার জন আক্রান্ত হওয়ার পর যারা মারা গেছেন- তাদের বেশিরভাগেরই ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হার্টে সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপ ছিল। আক্রান্ত অবস্থায় হঠাৎ করেই সেসব রোগের উপসর্গ বেড়ে গিয়ে তাদের অনেকের মৃত্যু হয়েছে।
৪. ওজন
শারীরিকভাবে বেশি ওজনের মানুষদের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটতে দেখা গেছে। ফ্রান্সের গবেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে এতো বেশি মানুষ মারা যাওয়ার প্রধান কারণ হলো বাড়তি ওজন।
৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
করোনাভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। সে ক্ষেত্রে কেবল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই পারে আক্রান্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে টেনে আনতে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে যুদ্ধে পরাজিত হচ্ছেন।