আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মহামারী করোনাভাইরাসে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। এ কারণে প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গী হয়েছে মাস্ক। বাইরে গেলেই মুখে মাস্ক পরে যেতে হচ্ছে। এ অবস্থায় সারতে হচ্ছে প্রয়োজনীয় কাজ। অনেকের কাছে এতে অস্বস্তিবোধও লাগছে। কিন্তু তা স্বত্বেও মাস্ক পরার কারণে আমরা করোনাভাইরাসসহ বিভিন্ন ধরনের জীবাণু থেকে সুরক্ষা পাচ্ছি।
সম্প্রতি ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হতে থাকে মাস্ক পরার অসুবিধা নিয়ে বিভিন্ন কথা। ওইসব ভাইরাল কন্টেন্টে দাবিও করা হয়েছিল- মাস্ক পরলে শরীরে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ হয় না, এর ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতায় সমস্যা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এসব দাবিকে অস্বীকার করে বলছে, মাস্ক পরলে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন নিতে কোন সমস্যা হয় না।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং আমেরিকান লাং অ্যাসোসিয়েশন সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ছড়ানো এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে।
কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই বিষয়ে ধারণা পেতে তারা গড়পড়তায় সাড়ে ৭৬ বছর বয়স্ক ২৫ ব্যক্তিকে বহনযোগ্য পালস অক্সিমিটার দেয়। সেখানে তাদেরকে মাস্ক পরানোর এক ঘণ্টা আগে এবং পরে তাদের ব্লাড অক্সিজেন মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা হয়। গবেষকরা সেখানে এ বিষয়ে কোন হাইপোক্সিয়া লক্ষণ অথবা অক্সিজেন কমে যাওয়ার কোন লক্ষণ দেখতে পায়নি।
সংক্রমণ রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যারন গ্ল্যাট বলেন, আমরা আগেই জানতাম মাস্ক পরিধান করার ফলে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যায় না। কিছু মানুষ মাস্ক পরাটাকে অস্বস্তিকর মনে করে। কিন্তু এটি কোন অজুহাতই না।
গ্লাট বলেন, আমি মাস্ক পরাটাকে গাড়ির সিট বেল্ট বাঁধার মতো দেখি। সিট বেল্ট বাঁধলে আরামদায়ক মনে হবে না কিন্তু সেটি তোমাকে রক্ষা করবে।
ডা. নোয়েল চানের গবেষণা দল প্রত্যেক অংশগ্রহণকারীকে এমন ননমেডিকেল মুখের মাস্ক দেন যেটিতে রয়েছে তিনটি স্তর যা ব্যবহারের পর ফেলে দেয়া যায়। সেচ্ছাসেবীদেরকে মাস্কগুলো পরানোর ঠিক এক ঘণ্টা আগে এবং এক ঘণ্টা পরে পালস অক্সিমিটার ব্যবহার করে তাদের দৈনন্দিন কাজ এবং বিশ্রাম পর্যবেক্ষণ করা হয়।
তখন ওই গবেষণায় বিশেষজ্ঞরা দেখতে পান- অক্সিজেন স্যাচুরেশনে তেমন কোন উদ্বেগজনক পরিবর্তন সেখানে নেই। মাস্ক পরিধানের আগে অংশগ্রহণকারীদের গড়পড়তায় অক্সিজেন স্যাচুরেশন ছিল শতকরা ৯৬.১ হারে এবং পরিধানের পরে খুবই হালকা বেড়ে গিয়ে শতকরা ৯৬.৩ থেকে ৯৬.৫ হারে ছিল।
এই গবেষণাপত্রটি গত বছরের ৩০ অক্টোবর অনলাইনে প্রকাশিত হয় আমেরিকান মেডিকেল এ্যাসোসিয়েশন জার্নালে।
সূত্র: হেলথ ডে নিউজ, ওয়েবএমডি
সান নিউজ/এসএস