নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভয়াবহ করোনাভাইরাসের থাবায় বিশ্বজুড়ে ভেন্টিলেটর এখন চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। দেশের হাসপাতালগুলোতে রয়েছে সীমিত সংখ্যক ভেন্টিলেটর। ধারণা করা হচ্ছে, করোনা রোগী বাড়তে থাকলে দেশেও ভেন্টিলেটরের চাহিদা বাড়বে।
এ বিষয়টি মাথায় রেখে মৃত্যুপথযাত্রী 'কভিড-১৯' আক্রান্ত রোগীদের জন্য সুখবর নিয়ে এসেছে বাংলাদেশ ভিত্তিক বহুজাতিক তথ্যপ্রযুক্তি কোম্পানি টাইগার আইটি।
কোম্পানির অঙ্গপ্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেডের স্থানীয় প্রকৌশলী ও ডেভেলপাররা প্রথমবারের মতো দেশেই পরীক্ষামূলক সাশ্রয়ী দামের ভেন্টিলেটর তৈরি করতে সমর্থ হয়েছেন।
এ জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) গবেষণা সংস্থা এমআইটি মিডিয়া ল্যাবের ভেন্টিলেটর সংশ্নিষ্ট প্রাথমিক কনসেপ্ট নোট (ধারণাপত্র) নিয়ে কাজ করেছে কোম্পানিটি। মূলত গত বছর থেকে একাধিক প্রকল্প নিয়ে এমআইটি মিডিয়া ল্যাবের সঙ্গে কাজ করছে টাইগার আইটি।
টাইগার আইটি সূত্র জানিয়েছে, এমআইটি মিডিয়া ল্যাবের ধারণাপত্রটিকে নিজেদের মতো ডিজাইনিং ও ডেভেলপ করে এরইমধ্যে সফলভাবে ভেন্টিলেটর তৈরি করা হয়েছে। সাশ্রয়ী দামের এ ভেন্টিলেটর করোনাভাইরাস আক্রান্ত শ্বাসকষ্টের রোগীর ফুসফুসকে সক্রিয় রেখে প্রয়োজনীয় বাতাস সরবরাহে ব্যবহার করা যাবে।
এ সম্পর্কে টাইগার আইটি বাংলাদেশের ব্যবসা উন্নয়ন ব্যবস্থাপক এ এইচ এম রাশেদ সরওয়ার বলেন, 'দেশে সহজলভ্য এমন যন্ত্রাংশ ব্যবহার করে আমরা নন-ইনভেসিভ ভেন্টিলেটর তৈরি করেছি। লকডাউনের এই সময়ে আমাদের প্রকৌশলী সাজ্জাদুল হাকিম ও রেদোয়ান হাসানের নেতৃত্বে একটি টিম ঘরে বসেই ডিভাইসটি বানিয়েছে। ভেন্টিলেটরটি তৈরিতে সর্বোচ্চ খরচ হবে ১৫ হাজার টাকার মতো। ভারতেই এই মানের একটি ভেন্টিলেটর কিনতে খরচ হবে প্রায় ৮০ হাজার টাকা।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী জিয়াউর রহমান বলেন, 'দেশে করোনার প্রাদুর্ভাবে সংক্রমণের হার বাড়লে আক্রান্ত রোগীদের জীবন বাঁচাতে ভেন্টিলেটর অপরিহার্য হয়ে পড়বে। এই আশঙ্কা থেকেই আমরা ভেন্টিলেটর তৈরির প্রকল্পে যুক্ত হয়েছি। মহামারির এই সময়ে দেশের মানুষের জীবন বাঁচাতে এটি আমরা তৈরি করছি। আমরা প্রাথমিকভাবে সম্পূর্ণ আমাদের অর্থায়নে তৈরি ৫০০ ইউনিট ভেন্টিলেটর সরকারের হাতে তুলে দিতে চাই। ভেন্টিলেটরটির ব্যবহার উপযোগিতা যাচাইয়ের জন্য চলতি সপ্তাহে রাজধানীর করোনা সম্পর্কিত একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং অন্য একটি সরকারি হাসপাতালে দেওয়া হবে। এরপর ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে এ মাসেই ডিভাইসটির উৎপাদনে যেতে চাই আমরা।
তিনি বলেন, ভেন্টিলেটরের ডিজাইন এবং স্পেসিফিকেশন উন্মুক্ত থাকবে। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে এ ডিজাইন ব্যবহার করে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান ভেন্টিলেটর বানাতে পারবে। ডিভাইসটি 'কভিড-১৯' আক্রান্ত রোগীর পাশাপাশি যে কোনো ধরনের শ্বাসকষ্টের রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে।
সান নিউজ/সালি