নিজস্ব প্রতিবেদক : নরসিংদীর বাবুরহাট থেকে জাতীয় ক্যানসার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ইশ্রাফিল। তার আগে ৪ মাস থাকতে হয়েছিল এই হাসপাতালেই। সঙ্গে আছে মা। বাড়িতে অসুস্থ বাবা আর ছোটবোন। ক্যানসার হাসপাতালে মা-ছেলের সঙ্গে দেখা হয় এ প্রতিবেদকের।
চামড়ার ওপর হাত দিলে মনেই হয় না চামড়া। এত পাতলা। নরসিংদীর হাসপাতালে চিকিৎসা হয়। সারে না। ৮ দিন গেল। আমি মনে করলাম সেরে গেছে। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাই। আবার ফুলে ওঠে। ছড়িয়ে যায় কয়েক জায়গায়। ডাক্তারের কাছে গেলে ডাক্তারও ফেরত পাঠায়।
পরে ঢাকা মেডিকেলে গেলাম। সেখানে অপারেশন হয়। বলা হলো, বায়োপসি করতে। তারা বললো এটা ক্যানসার।’ মার্জিয়া বেগম জানালেন, ‘দুই শতক জায়গা ছিল। সেটা বিক্রি করে চিকিৎসা করাচ্ছি। এখন টাকা নাই। গ্রামের মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে এতদূর। আর পারি না। আল্লাহই জানেন, কিভাবে টাকার যোগাড় হবে। ছেলেকে তো বাঁচানো লাগবে।’
একই হাসপাতালে দেখা হয় ৭ বছরের জুনাইদের সঙ্গে। ৪ মাস চিকিৎসার পর ডাক্তররা জানান জুনাইদ হাড়ের ক্যানসারে আক্রান্ত। ৪ টি কেমোথেরাপি দেওয়া হয়েছে। দিতে হবে আরও দুটি। তারপর সার্জারি করবে বলে জানিয়েছেন জুনাইদের মা আদুরি বেগম।
৪ মাসে কত টাকা খরচ হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘হাসপাতালের পাশেই বাসা ভাড়া করে থাকি। দিনে ৩০০ টাকা করে। সঙ্গে খাওয়া খরচ আছে। ৪ মাসে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। জমি-জমা কিছু আর নেই। তারপরও যদি ছেলেটাকে বাঁচানো যায়...।’
৭ বছরের আরাফ ৯ তলার ওয়ার্ডে। ফরিদপুর থেকে একমাত্র ছেলেকে নিয়ে এসেছেন বাবা-মা। ৭ মাস ধরে এই হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে আরাফের। মাঝে মাঝে বাড়ি যাওয়া হয়। আবার আসতে হয় হাসপাতালে। ফরিদপুরে অনেক হাসপাতালে গিয়েছি। কেউ কিছু বলতে পারেনি। পরে সেখানকার এক চিকিৎসকের পরামর্শে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসি। পরীক্ষার পর আরাফের ক্যানসার ধরা পড়ে।’ জানালেন আরাফের মা।
ব্লাড ক্যানসার আক্রান্ত আরাফকে মাঝে মাঝেই রক্ত দিতে হয়। আত্মীয়দের কাছে ধারদেনা চলছে। ৭ মাসে প্রায় ৪ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে জানিয়ে মা বলেন, ‘মধ্যবিত্ত সমাজের এই এক দায়- না পারি কারও কাছে চাইতে, না পারি ছেলের অসহায় অবস্থা দেখতে। ক্যানসার বড় কঠিন, সব কেড়ে নেয়।
সান নিউজ/এসএ