আন্তর্জাতিক ডেস্ক : করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে শিশুদের ওপর ভ্যাকসিনের ট্রায়াল দিতে যাচ্ছে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি। এ্যাস্ট্রাজেনেকার সঙ্গে যৌথভাবে আবিষ্কৃত তাদের ভ্যাকসিনটি প্রথমবারের মতো শিশুদের ওপর ট্রায়াল করা হচ্ছে। চলতি মাসেই ৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী প্রায় ৩০০ জন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ প্রয়োগ করা হবে বলে জানিয়েছে অক্সফোর্ড। খবর রয়টার্স।
করোনা ভাইরাস মহামারীর লাগাম টেনে ধরতে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক হারে ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রম পরিচালনা করতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার। তবে এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিনেশন কার্যক্রমের আওতায় কেবল সম্মুখসারির লোকজন ও বেশি বয়সীদের অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি সব বয়সীদের ভ্যাকসিনের আওতায় আনতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে আবিষ্কারক প্রতিষ্ঠানগুলো।
এরই মধ্যে শিশুদের ওপর ট্রায়ালের এ খবর জানিয়েছে অক্সফোর্ড। মূলত শিশুদের শরীরে ভ্যাকসিনটির প্রয়োগ নিরাপদ কিনা এবং সেটি করোনা প্রতিরোধ সক্ষমতা বা ইমিউনিটি তৈরি করতে পারবে কিনা, তা মূল্যায়ন করা এ ট্রায়ালের মূল লক্ষ্য। তবে আশার কথা হলো এখন পর্যন্ত শিশুদের ওপর করোনা ভাইরাস তেমন মারাত্মক প্রভাব ফেলতে সক্ষম হয়নি। এর পরও শিশুদের ওপর এ ট্রায়ালকে ইতিবাচক ও সময়োপযোগী হিসেবে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা।
দ্য রয়েল কলেজ অব পেডিয়াট্রিকস এন্ড চাইল্ড হেলথের এক প্রতিবেদন বলছে, এখন পর্যন্ত শিশুদের ওপর করোনা ঝুঁকিপূর্ণ ও মৃত্যুর কারণ হিসেবে দেখা যায়নি। বিষয়টি এখন স্পষ্ট যে এটি বয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ওপর তেমন কোনও প্রভাব ফেলছে না।
পেডিয়াট্রিকস ইনফেকশন এন্ড ইমিউনিটির অধ্যাপক ও অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন ট্রায়ালের প্রধান ইনভেস্টিগেটর এ্যান্ডিউ পোলার্ড বলেন, যেহেতু করোনা ভাইরাসের ফলে শিশুদের সংক্রমিত হওয়ার ঘটনা কম, সেহেতু এখন শিশুদের ওপর ভ্যাকসিনের ট্রায়াল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এর মধ্য দিয়ে যুবক ও অল্প হলেও যেসব শিশু সংক্রমিত হচ্ছে তাদের জন্য এ ট্রায়াল বড় কার্যকর হবে।
করোনার বিরুদ্ধে আবিষ্কৃত ভ্যাকসিনের মান আরো উন্নত করার জন্য দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এর আগে চলতি সপ্তাহের শুরুতে ইংল্যান্ডের ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার প্রফেসর ভ্যান টেম ভ্যাকসিন উন্নত করতে এটি টিনএজারদের ওপর প্রয়োগ নিরাপদ কিনা, সেজন্য বেশকিছু ট্রায়ালের উদ্যোগের কথা জানান।
তিনি বলেন, আমি মনে করি এখন সব আবিষ্কারকের উচিত শিশুদের ওপর ভ্যাকসিন প্রয়োগ নিরাপদ ও কার্যকর কিনা সেটির জন্য ট্রায়াল করা। বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাস মহামারীর বিরুদ্ধে লড়তে যেসব ভ্যাকসিন আবিষ্কার করা হচ্ছে, তার মধ্যে অক্সফোর্ড ও এ্যাস্ট্রাজেনেকা সবদিক থেকে এগিয়ে রয়েছে। তাদের ভ্যাকসিনই এখন পর্যন্ত আশা দেখাচ্ছে।
কারণ প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যদের তুলনায় তাদের ভ্যাকসিন দামে যেমন সস্তা, তেমনি বিতরণ ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে অন্যদের তুলনায় বেশ সহজ। প্রাথমিকভাবে এ্যাস্ট্রাজেনেকা প্রতি বছর ৩০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। আর এপ্রিলের মধ্যেই প্রতি মাসে ২০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন উৎপাদন করতে চায় ব্রিটিশ ফার্মাসিউটিক্যালস প্রতিষ্ঠানটি।
সান নিউজ/এসএ