আন্তর্জাতিক ডেস্ক: করোনার নতুন ধরন বা স্ট্রেইন প্রতিরোধে ব্যর্থ হওয়ায় অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা দেয়া বন্ধ করে দিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা।
রোববার ( ৭ ফেব্রুয়ারি) দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জোয়েলিনি ম্যাখিজে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।কাতার ভিত্তিক আলজাজিরা জানায়, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত অক্সফোর্ডের ১০ লাখ টিকা গত সপ্তাহে দক্ষিণ আফ্রিকা গ্রহণ করে। এখন সেগুলো ব্যবহার না করে অন্য দুইটি প্রতিষ্ঠানের টিকা সংগ্রহের কথা ভাবছে দেশটি।
নতুন ধরনের যে করোনা ভাইরাস দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দ্রুত ছড়াচ্ছে, অক্সফোর্ডের আবিষ্কৃত টিকা তা আটকাতে পারছে না বলে প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে।
ডয়চে ভেলে জানায়, সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকায় এ নিয়ে একটি পরীক্ষা হয়েছিল। তাতেই এমন ফলাফল পাওয়া গিয়েছে। এতে দেখা যায়, প্রথমদিকে শনাক্ত করোনার ৫০১ ওয়াই.ভি২ ভ্যারিয়েন্টের কারণে সৃষ্ট হালকা ও মাঝারি ধরনের উপসর্গ থেকে সুরক্ষা দিতে সক্ষম অক্সফোর্ডের টিকা।
গত এক মাস আগে করোনার বি.১.৩৫১ ভেরিয়েন্টের ভাইরাস দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে। এই ভাইরাসটিই দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছিল। ইউরোপের বেশ কিছু দেশেও ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রথম দিকে করোনা ভাইরাস থেকে নতুন ভেরিয়েন্টের এই জীবাণু অনেক বেশি সংক্রামক। সাধারণ করোনা ভাইরাস থেকে প্রায় ৭০ শতাংশ বেশি ছড়াতে পারে এটি। এর জেরেই গত এক মাসে করোনা সংক্রমণের হার লাফিয়ে বেড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকায়।
সোমবার ( ৮ ফেব্রুয়ারি) এর মধ্যে সেরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ডের টিকা দক্ষিণ আফ্রিকায় পৌঁছে। প্রায় ১০ লাখ টিকা দ্রুত দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিল। কিন্তু তারই মধ্যে, দুই হাজার মানুষকে নিয়ে সেখানকার গবেষকেরা একটি পরীক্ষা চালানো হয়।
পরীক্ষা দেখা যায়, করোনার নতুন স্ট্রেইনের মোকাবিলা করতে পারছে না অক্সফোর্ডের টিকাটি। তারপরই সেটি আপাতত ব্যবহার না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। দেশের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিবৃতি দিয়ে রোববার এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন।
দক্ষিণ আফ্রিকায় এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ দশমিক ৫ মিলিয়ন মানুষ। মৃত্যু হয়েছে ৪৬ হাজার মানুষের। দক্ষিণ আফ্রিকার প্রশাসন ঠিক করেছে দ্রুত দেশের ৬৭ শতাংশ মানুষকে টিকা দেওয়া হবে। কিন্তু তারই মধ্যে এই বিপর্যয় ঘটল।
তবে সরকার জানিয়েছে, অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিন দিতে না পারলেও জনসন এন্ড জনসন এবং ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। ওই দুইটি ভ্যাকসিন নতুন স্ট্রেইনের সঙ্গেও লড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকাও জানিয়েছে, নতুন স্ট্রেইনের সঙ্গে লড়াই করার মতো টিকা গরমের মধ্যেই তারা নিয়ে আসবে। এদিকে, হাতে পাওয়া টিকা কীভাবে ব্যবহার করবে সে বিষয়ে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশেষজ্ঞরা পরিকল্পনা করছেন।
সান নিউজ/এসএ