নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে প্রথমবারের মতো করোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনলাইনে যুক্ত হয়ে কুর্মিটোলা হাসপাতালে করোনা ভাইরাসের টিকাদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন তিনি।
বুধবার (২৭ জানুয়ারি) প্রথম দিন রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৫ জনকে এ টিকা দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী প্রথমে ৫জনের শরীরে টিকা দেওয়া প্রত্যক্ষ করবেন। এর মাধ্যমেই দেশে টিকা দেয়া শুরু হয়ে যাবে। তবে দেশব্যাপী ব্যাপক টিকাদান কর্মসূচি শুরু হবে আগামী ৭ ফেব্রুয়ারি। টিকা প্রয়োগ কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে করার প্রস্তুতি শেষের পথে বলে জানিয়েছেন কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, টিকার প্রয়োগ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সব প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল প্লাটফর্মে উপস্থিত হয়ে ৩ জন নার্স ও ২ জন চিকিৎসকের ওপর টিকা প্রয়োগ দেখবেন। তারা শুরু থেকেই করোনা রোগীদের সেবা দিয়ে আসছেন।
প্রথম দিন যারা টিকা গ্রহণ করবেন তাদের মধ্যে চিকিৎসক, নার্স ছাড়াও সাংবাদিক, পুলিশসহ সম্মুখ সারির করোনা যোদ্ধারা রয়েছেন। প্রথম টিকা প্রয়োগের পরদিন অর্থাৎ আগামীকাল রাজধানীর আরও ৪টি হাসপাতালে সম্মুখসারির ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেয়া হবে।
এজন্য বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে এ টিকার কোনও ধরনের ট্রায়াল (পরীক্ষামূলক প্রয়োগ) না হওয়ায় এসব হাসপাতালে নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের ওপর প্রয়োগ করে তাদের পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
সবকিছু ঠিক থাকলে ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে সারা দেশে টিকাদান শুরু করবে সরকার। এজন্য জেলা-উপজেলা পর্যায়ে টিকা পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। প্রতিদিন ২ লাখ করে প্রথম মাসেই ৬০ লাখ ডোজ টিকা সারা দেশে দেয়া হবে।
রাজধানীর ৫ হাসপাতালে টিকাদান কার্যক্রমের বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা মঙ্গলবার বলেন, ‘বৃহস্পতিবার ৫ হাসপাতালের কতজনকে টিকা দেয়া হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এ তালিকা সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল করছে। তাদের তালিকার সবাইকে দেয়া হবে না। তবে প্রতি হাসপাতালে কমপক্ষে ১০০ জনকে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।’
এদিকে ভারত থেকে আসা প্রথম চালানের ৫০ লাখ ডোজ টিকা প্রয়োগের অনুমতি দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর। মঙ্গলবার ঔষধ প্রশাসন অধিদফতরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাহবুবুর রহমান এক সংবাদ সম্মেলনে সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুতকৃত অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার প্রথম চালান থেকে পরীক্ষা করে প্রয়োগের বিষয়ে অনাপত্তি দেয়ার কথা জানান।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণের লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন বলেন, টিকাদান কার্যক্রমের উদ্বোধনের পরই সুরক্ষা অ্যাপ সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে। এখন ডেমু (পরীক্ষামূলক কার্যক্রম) চালানো হচ্ছে। যারা নিবন্ধন করতে পারবেন না, তারা ভ্যাকসিন কেন্দ্রে গিয়ে নিবন্ধন করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের হাতে অক্সফোর্ড-এ্যাস্ট্রাজেনেকার ফর্মুলায় ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটে প্রস্তুতকৃত করোনা ভাইরাসের টিকার ৭০ লাখ ডোজ রয়েছে। এর মধ্যে ২০ লাখ ডোজ ভারত সরকারের পক্ষ থেকে উপহার পেয়েছে বাংলাদেশ। গত ২১ জানুয়ারি উপহারের এ টিকা বাংলাদেশকে হস্তান্তর করে ভারত। বাকি ৫০ লাখ ডোজ সেরাম ইনস্টিটিউট থেকে কিনেছে সরকার। সেরাম থেকে সরকারের কেনা ৩ কোটি ডোজের আড়াই কোটি ডোজ টিকা পরবর্তী ৫ মাসে আসবে।
সান নিউজ/এসএ