নিজস্ব প্রতিবেদক : বর্তমানে সরকারি-বেসরকারি সকল হাসাপতালে করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেসব হাসপাতালে অক্সিজেনের ব্যবহার সংক্রান্ত ১০টি এবং করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ১০টি জরুরি পরীক্ষার মূল্য স্বাস্থ্য অধিদফতর কর্তৃক নির্ধারিত করে দেওয়া তালিকা প্রদর্শন করতে হবে।
রোববার ( ১৩ ডিসেম্বর) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সহকারী এ্যাটর্নি জেনারেল কালীপদ মৃধা। এ বিষয়ের ওপর শুনানি করেন রিটকারীর আইনজীবী ড. বশির আহমেদ।
আদালতের আদেশ পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য সচিব ও স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালককে মূল্য তালিকা প্রদর্শনের ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে হেলথ রেগুলেটরি কমিশন গঠন, পরীক্ষা-নিরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ মূল্য তালিকা ও আইসিইউ স্থাপনের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদাণ করা হয়েছে।
হাইকোর্টে করা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত ৩ সেপ্টেম্বর এক সভায় স্বাস্থ্য অধিদফতর অক্সিজেনের মূল্য নির্ধারণ ও করোনা সম্পর্কিত কিছু পরীক্ষার মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। সে সভায় বাংলাদেশ বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক ওনার্স এসোসিয়েশনের নের্তৃবৃন্দসহ কয়েকটি হাসপাতালের পারিচালকরা ও উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ভ্যাটসহ প্রতি কিউবিক মিটার অক্সিজেনের রিফিলিং মূল্য ৬৫ টাকা করে খরচ পড়ে মর্মে পূর্বে বর্ণিত চিঠি মারফত জানা যায়। তবে অক্সিজেন সিলিন্ডার পরিবহন ব্যয়ের বাইরে অতিরিক্ত হিসাবে গণ্য হবে।
প্রতিবেদনে করোনা আক্রান্তদের ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার রিপিটেডলি করতে হয় এবং ডেঙ্গু রোগীর পরীক্ষার মূল্যও নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সিবিসি পরীক্ষার স্থিরকৃত মূল্য ৫০০ টাকা, সিআরপির ৬০০ টাকা, এলএফটির ১০০০ টাকা, এস.ক্রিটিমের ৪০০ টাকা, এস ইলেকট্রগলের ১০০০ টাকা, ডি.ডিমারের ১৫০০ টাকা, এস.ফ্রিশনের ১২০০ টাকা, এস.প্রকলসিটোনিনের ২০০০ টাকা, সিটি স্ক্যান-চেস্টের ৬০০০ টাকা, চেস্ট এক্সরের (এনালগ) ৪০০ টাকা এবং চেস্ট এক্সরের (এনালগ) স্থিরকৃত মূল্য ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
একক অক্সিজেন সিলিন্ডার ও মেনিফোল্ড অক্সিজেন সিলিন্ডার সিস্টেম, সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম (জেনারেটর ভিত্তিক), সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম (তরল অক্সিজেন ট্যাংক ভিত্তিক) এবং সেন্ট্রাল অক্সিজেন সিস্টেম প্লাস হাইফ্লো নেজাল ক্যানুলার ব্যাপারেও মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন দেখে তা সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের সামনে উন্মুক্ত স্থানে টাঙানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।
তবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) মো. ফরিদ হোসেন মিঞা বলেছেন, সপ্তাহ দুয়েক আগে নতুন মূল্য তালিকা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কিন্তু মন্ত্রণালয় থেকে সে মূল্য তালিকার অনুমোদন এখনও আমরা পাইনি। অনুমোদনের আগে এ মূল্য তালিকা প্রদর্শন করা যাবে না।
রিটকারীর আইনজীবী বশির আহমেদ বলেন, স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার ফি (ইউজার ফি) নির্ধারণ, ১৯৮২ সালের দ্য মেডিক্যাল প্র্যাকটিস এন্ড প্রাইভেট ক্লিনিকস এন্ড ল্যাবরেটরিস (রেগুলেশন) অধ্যাদেশের বিধান যুগোপযোগী করে নতুন আইন প্রণয়ন ও হেলথ রেগুলেটরি কমিশন গঠন করার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
সারা দেশে জেলা সদরে ৩০ শয্যার আইসিইউ-সিসিইউ স্থাপনের অগ্রগতি আগামী ২০ জানুয়ারির মধ্যে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া স্বাস্থ্য অধিদ|ফতর করোনা রোগীদের ১০টি পরীক্ষাসহ অক্সিজেনের মূল্য নির্ধারণ করেছে।
সান নিউজ/এসএ