নিজস্ব প্রতিবেদক : শীতের শুরুতে হঠাৎ করেই দেশের করোনা পরিস্থিতি আবারও অবনতির দিকে। সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোও আগাম সতর্কবার্তা দিয়ে চলেছেন এবং রয়েছেন সতর্কাবস্থানে। স্বাস্থ্যবিধি মানার জন্য মানুষকে আবারও জোর তাগিদ দিয়ে চলেছেন।
এমনকি স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সেসব ক্ষেত্রে কঠোর হওয়ারও নির্দেশনা রয়েছে। মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জেল-জরিমানা আদায়ের নির্দেশনাও রয়েছে। কিন্তু সরকারের এই নির্দেশনার প্রতি তোয়াক্কা নেই এক শ্রেণীর মানুষের। তারা কোনও কথাই কানে তুলছে না। এমনকি, রাস্তাঘাটে পর্যন্ত তারা মাস্ক পরছেন না।
শনিবার ( ২১ নভেম্বর) বেলা ৩টা থেকে ৩টা ৫ মিনিট। এই ৫মিনিটের ব্যবধানে শাপলা চত্বরের দক্ষিণ পাশের ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে গেছেন ৫৩ জন মানুষ। যার মধ্যে ২৫ জনের মুখে কোনও মাস্ক ছিল না। বাকি ২৮ জনের মাস্ক ছিল। কিন্তু এর মধ্যে আবার ১৫ জনের মাস্ক দেখা গেছে থুতনির নিচে ঝুলছে ! অবশিষ্ট ১৩ জনের মুখে ঠিকঠাক মাস্ক লক্ষ করা গেছে।
বেলা ৩টা ১০ থেকে ৩টা ১৫ পর্যন্ত ৭ টি বাস ইত্তেফাক মোড় অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে একটি বাসের হেলপারের মুখেও মাস্ক ছিল না। গোপীবাগ রেলগেট থেকে টিকাটুলি মোড় পর্যন্ত যে দোকানগুলো রয়েছে এর একজন দোকানদারের মুখেও মাস্ক দেখা যায়নি। এই হচ্ছে রাজধানীর স্বাস্থ্যবিধি! মোবাইল কোর্ট, জেল-জরিমানা এসবের প্রতিও এই মানুষগুলোর কোনো তোয়াক্কা নেই।
রাজধানীর পল্টন এলাকার এক ব্যবসায়ী জানান, তার দোকানে ১০ জন লোক এলে দেখা যায় পাঁচ-ছয় জনের মুখে কোনও মাস্ক নেই। তাদের বললেও মাস্ক পরেন না। উল্টো নানা বিতর্ক করেন। তাই এখন আর কাউকে কিছু বলেন না।
তিনি বলেন, সরকার নির্দেশনা দিলেও সেই নির্দেশনা কেউ মানছে না। আর এই নির্দেশনা তদারকিরও কোনও ব্যবস্থা নেই। তিনি বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানাতে হলে আরো অনেক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা দরকার।
মতিঝিল এলাকায় দুই বাস হেলপারকে মাস্ক না পরার কারণ জিজ্ঞাস করা হলে তাদের জবাব, ‘আমাদের কিছু হবে না। মাস্ক পরে লাভ কী?’ প্রশ্ন করা হলে জবাবে একাধিক পথচারী এই একই কথা বলেন। ‘তাদের কিছুই হবে না, বা ভাগ্যে থাকলে করোনা হবে।
মাস্ক পরে লাভ কী?’ আবার কোনও কোনও মানুষ আছেন যাদের মাস্ক আছে কিন্তু থুতনির নিচে মাস্ক ঝুলছে। তাদের কয়েকজনকে মাস্ক ঠিকঠাক না পরার কারণ জিজ্ঞেস করতেই থুতনি থেকে মাস্ক টেনে মুখের ওপর দেন।
মতিঝিল শাপলা চত্বরের ফুটপাথের ব্যবসায়ী খায়রুল বলেন, বাধ্য হয়ে দোকান খুলে বসেন। বেচা বিক্রিও করতে হয়। মানুষের সাথে কথা বলতে হয়। তবে মানুষ সচেতন নয়। তিনি বলেন, ফুটপাথে দোকান হওয়ায় হাজার হাজার মানুষ তার দোকানের সামনে দিয়ে যাতায়াত করেন। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই কোনও স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। সরকারের নির্দেশ মানছেন না। এমনকি মাস্ক পর্যন্ত পরছেন না।
সান নিউজ/এসএ