নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় বাজারে ব্যবহৃত ২৩ ধরনের রিংয়ের দাম কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। নতুন দাম অনুযায়ী সর্বনিম্ন ২০ হাজার ও সর্বোচ্চ ৬৮ হাজার টাকায় পাওয়া যাবে এই রিং।
আরও পড়ুন: চাষাঢ়ায় ভুল চিকিৎসায় কিশোরীর মৃত্যু
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের (ডিজিডিএ) দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা যায়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সঙ্গে বাংলাদেশে ইউরোপীয় ও অন্যান্য দেশের হার্টের রিং উৎপাদনকারী কোম্পানির প্রতিনিধি ও ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্টদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিভিন্ন কোম্পানির হার্টের রিংয়ের দাম কমানো হয়।
সর্বশেষ গত বছরের ডিসেম্বরে নির্ধারিত দামের থেকে বেশি দামে এই মূল্য নির্ধারণ করেছে অধিদপ্তর। নতুন দাম নির্ধারণ করায় রিং ভেদে দাম বেড়েছে ২ হাজার থেকে প্রায় ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।
ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ কার্ডিওভাসকুলার ডিজিজেসের পরিচালক ও ডিজিডিএ'র বিশেষজ্ঞ কমিটির সদস্য ডা. মীর জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন ইউরোপীয় আমদানিকারকেরা রিং সরবরাহ বন্ধ রাখায় বাজারে সংকট তৈরি হয়েছিল বলে দাম কিছুটা বাড়ানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: বান্দরবানের ফ্রি মেডিক্যাল ক্যাম্পেইন
তিনি জানান, "গত বছরের ডিসেম্বরে হার্ট রিংয়ের দাম কমানো হলে ইউরোপিয়ান রিং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো আদালতের দারস্থ হয়েছিল। রিটের মিমাংসা হওয়ার পর আমরা তাদের প্যারেন্ট কোম্পানির প্রতিনিধিদের নিয়ে বসেছিলাম। তারা জানিয়েছে ঐ দামে রিং বিক্রি করলে তাদের ক্ষতি হচ্ছে। ওই দামে তাদের পক্ষে রিং সরবরাহ করা সম্ভব নয়।"
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের যুগান্তকারী পদক্ষেপ হার্টের রিংয়ের মূল্য হ্রাসে। ২০২১ ও ২০২২ সালের রিংয়ের দামের সাথে ডিজিডিএ নতুন নির্ধারিত দামের তুলনা করা হয়েছে। রিংয়ের দাম সে হিসেবে কমেছে। তবে ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বরে নির্ধারণ করা দামের উল্লেখ নেই।
অধিদপ্তরটির পরিচালক (প্রশাসন) মো. সালাহ উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন থেকে আমরা রিংয়ের দাম কমানোর চেষ্টা করছিলাম। এর প্রেক্ষিতেই এটা করা হয়েছে। সবগুলো হাসপাতালে নতুন এ মূল্য তালিকা টানিয়ে রাখতে হবে।
আরও পড়ুন: ঈদ উপলক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ১২ নির্দেশনা
বাংলাদেশে হৃদরোগের চিকিৎসায় ২৬ ধরনের রিং ব্যবহার হয়ে থাকে। এগুলোর দাম নতুন মূল্য তালিকায় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। মাস কয়েক আগে ৩টি স্টেন্টের দাম কমানো হয়েছিল, এখন যেগুলো অপরিবর্তিত রয়েছে।
কোন রিংয়ের কত দাম নির্ধারণ-
১) পোল্যান্ডের তৈরি অ্যালেক্স প্লাস ব্র্যান্ডের দাম ৬০ হাজার টাকা, অ্যালেক্স ব্র্যান্ড ৬০ হাজার টাকা, অ্যাবারিস ব্র্যান্ড ৬০ হাজার টাকা।
২) জার্মানির করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর ব্র্যান্ডের দাম ৫৩ হাজার টাকা, করোফ্ল্যাক্স আইএসএআর নিও ব্র্যান্ড ৫৫ হাজার টাকা, জিলিমাস ব্র্যান্ড ৫৮ হাজার টাকা।
৩) সুইজারল্যান্ডের ওরসিরো ব্র্যান্ডের দাম ৬৩ হাজার টাকা, ওরসিরো মিশন ৬৮ হাজার টাকা।
৪) দক্ষিণ কোরিয়ার তৈরি জেনোস ডেস ব্র্যান্ডের দাম ৫৬ হাজার টাকা।
৫) স্পেনের ইভাসকুলার এনজিওলাইটের দাম ৬২ হাজার টাকা।
৬) জাপানের আল্টিমাস্টারের দাম ৬৬ হাজার টাকা।
৭) নেদারল্যান্ডসের অ্যাবলুমিনাস ডেস প্লাসের দাম ৬৩ হাজার টাকা করা হয়েছে।
৮) ভারতে তৈরি মেটাফর ব্র্যান্ডের দাম ৪০ হাজার টাকা, এভারমাইন ফিফটি ব্র্যান্ড ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম মর্ফ ৫০ হাজার টাকা, বায়োমাইম ৪৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।
৯) যুক্তরাষ্ট্রের অ্যাফিনিটি-এমএস মিনির দাম ৬০ হাজার টাকা, ডিরেক্ট-স্টেন্ট সিরো ৬৬ হাজার টাকা এবং ডিরেক্ট-স্টেন্ট ৩০ হাজার টাকা।
১০) সিঙ্গাপুরের তৈরি বায়োমেট্রিক্স নিওফ্ল্যাক্সের দাম ৬০ হাজার টাকা, বায়োমেট্রিক্স আলফা ৬৬ হাজার টাকা এবং বায়োফ্রিডম ৬৮ হাজার।
সান নিউজ/এএ