গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি: ভোরের শিশির ভেজা ঘাস জানান দিচ্ছে নবান্নের উপস্থিতি। অগ্রহায়ণে মাঠে দুলছে সোনালি পাকা ধান। কৃষক কাস্তে হাতে পাকা ধান কাটতে ব্যস্ত।
আরও পড়ুন: ধান কাটার পর আলু চাষে ব্যস্ত কৃষকরা
সেই ধানে অবস্থা সম্পন্নদের ঘরে হয় পিঠা-পুলির উৎসব। তবে যাদের নিজেদের জমি নেই, ধান নেই, তাদেরও খেতে ইচ্ছা হয় পিঠা-পায়েস।
গ্রামীণ সমাজে নুন আনতে পান্তা ফুরোনো অতি গরিব সাধারণ মানুষের পরিবারেও শীতের সময় পিঠা-পুলির চাহিদা তৈরি হয়। তাদের ধানের উৎস তখন কৃষকের ধান কেটে আসা মাঠে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে থাকা ধান।
গাইবান্ধার বিভিন্ন এলাকায় এভাবেই নতুন ধান জোগাড় করতে দেখা যায় শিশু ও মহিলাদের। এদের অধিকাংশই নিম্ন আয়ের মানুষ।
আরও পড়ুন: হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামীণ পিঠাপুলির উৎসব
সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শান্তিরাম গ্রামের রহিমা বেগম বলেন, দিনে ২-৩ কেজি ধান সংগ্রহ করেন। ধান পাকলে ১৫ দিনের মধ্যে মাঠের ধান কাটা শেষ হয়। এর মধ্যেই ১৫-২০ কেজি ধান সংগ্রহ করতে পারেন।
ধান সংগ্রহের পর মাটি ধুয়ে পরিষ্কার করে শুকিয়ে নিতে হয়। সেই ধান মেশিনে ভাঙ্গিয়ে চালের গুঁড়ায় বানান ভাপা, মুঠো, চিতাই, দুধ পুলি, দুধ চিতইসহ বিভিন্ন ধরনের পিঠা।
এক সময় ঢেকিতে ধান ভানার প্রচলন থাকলেও এখন তা বিলুপ্তপ্রায়।
আরও পড়ুন: শুঁটকি উৎপাদনে লাখো মানুষের কর্মসংস্থান
শীত এসেছে মেয়ের জামাইকে পিঠা খাওয়ার দাওয়াত দিতে হবে। আমাগো আবাদি খেত নাই। এভাবে যত ধান পাইছি, পরিবারের সবাই মিলে পিঠা খেতে পারবো।
জবেদা বেগম বলেন, ছোটবেলায় পাড়ার মেয়েরা দল বেঁধে এভাবে ধান কুড়াতাম। এখনকার মেয়েরা মাঠে আসে না। আগের মতো সেই আনন্দ এখন আর নেই। ২ মেয়ে-জামাই আছে ও নাতি-নাতনিদের পিঠা খাওয়ানোর জন্য ধান কুড়াই।
আনোয়ারা বেওয়া বলেন, আগে চামারা ধানের আবাদ আছিল। সেই ধানের পিঠা অনেক স্বাদ আছিল। এখন আগের মতো পানি হয় না, চামারা ধানের আবাদ নাই। ধান কুড়াচ্ছি, পিঠা বানামু।
সান নিউজ/এনজে