আনারসের রাজধানী খ্যাত টাঙ্গাইলের মধুপুরে প্রচুর কলা চাষ হয়। ফল দেয়ার পর এসব গাছ ফেলে দেয়া হতো। কিন্তু বর্তমানে এ কলাগাছ ও আনারসের পাতা দিয়ে তৈরি হচ্ছে নানা ধরনের সৌখিন পণ্য।
মধুপুরের জাঙ্গালিয়া গ্রামে ২০১৭ সালে এরকম হস্তশিল্প কারাখানা চালু হয়। যেখানে কাজ করে আর্থিক সচ্ছলতা ফিরে পেয়েছেন অর্ধশতাধিক নারী।
সরেজমিন দেখা গেছে, কয়েকজন শ্রমিক ফেলে দেয়া কলাগাছ ও আনারসের পাতা সংগ্রহ করে কারখানায় নিয়ে আসছেন। পাশেই দুই শ্রমিক এসব পাতা থেকে আঁশ বের করছেন। এরপর ধুয়ে তা পরিষ্কার করে রোদে শুকাতে দিচ্ছেন।
তাদের একজন মো. ফিরোজ বলেন, কলাগাছের বাকল ও আনারসের পাতা থেকে এতো সুন্দর কিছু হতে পারে তা জানতাম না। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে সব জানতে পেরেছি। প্রথমে মেশিনের মাধ্যমে কলাগাছ ও আনারসের পাতা থেকে আঁশ বের করা হয়। পরে এ আঁশ দিয়ে টিস্যু বক্স, ডেস্ক অর্গানাইজার, নেট, পর্দা, ফ্লাওয়ার বক্স, ওয়াল হ্যাঙ্গিং, চাবির রিংসহ নানা পণ্য তৈরি করা হয়।
আরেকজন হলেন মো. আমিনুর। তিনি বলেন, আমাদের পণ্যগুলো আকর্ষণীয় হওয়ায় প্রচুর চাহিদা রয়েছে। তাই কাজের অর্ডারও অনেক বেশি। এখানে কাজ করে আমার মতো শতাধিক মানুষ কর্মসংস্থানের পাশাপাশি স্বাবলম্বীও হচ্ছেন।
প্রশিক্ষক রিমা হাজং গারো বলেন, নারীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে বিভিন্ন সৌখিন জিনিসপত্র তৈরি হচ্ছে। এতে দরিদ্র নারীরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। আগে যারা বন, আনারস ও কলা বাগানে কাজ করতেন তারাও এখানে কাজ করছেন।
নারী উদ্যোক্তা ও ব্যুরো ক্রাফটের মুখ্য সমন্বয়ক রাহেলা জাকির বলেন, মধুপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর বসবাস ও পিছিয়ে পড়া দরিদ্র নারীদের কর্মসংস্থান তৈরির লক্ষে মধুপুরে এ প্রকল্প নেয়া হয়েছে। এখন কয়েকশ নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও কয়েক হাজার নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে আত্মনির্ভরশীল করে গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের।
সান নিউজ/সালি