মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: ইব্রাহিম শেখ (৭৫)। এক সময় ১৫ বিঘা জমি ছিল তার। নিজ জমিতে শ্রমিক নিয়ে ওই সমস্ত জমি চাষাবাদ করতো সে। এখন বৃদ্ধ বয়সে পরের জমিতে শ্রমিকের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। ইব্রাহিমের একমাত্র ছেলে বিল্লাল আখের মেশিনে কাজ করে, যা আয় করে তা দিয়ে সংসার চলে না তাদের।
আরও পড়ুন: পূজায় কোনো ধরনের হুমকি নেই
নদীতে ভিটেমাটি হারানোর পর পরের ভিটিতে ভাড়া নিয়ে থাকতে গিয়ে গুনতে হচ্ছে ভাড়ার টাকা। এতে ব্যয় বেড়েছে সংসারের। দ্রব্যমূল্যের মূল্যবৃদ্ধির বাজারে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ইব্রাহিমের।
গত শনিবার দুপুর আনুমানিক ১টার দিকে তপ্ত রৌদ্রে উপজেলার পাচগাঁও গ্রামে জমিতে শ্রমিকের কাজ করতে দেখা যায় ইব্রাহিমকে। বয়সের ভারে তিনি, নুয়ে পড়লেও এই বয়সেও কাজে বেশ পারদর্শী। এখনকার যুবকদের মতই সমানতালে কাজ করে যান তিনি।
তার সাথে কাজ করা ফজল মিয়া বলেন, তার এক সময় বড় উঠনের বাড়ি ছিল। নদী পাড়ে হওয়াতে আর তা নেই। নদীর পাড়ের মানুষের দুঃখের শেষ নেই। তার মতো এ উপজেলায় আরও অনেক লোক রয়েছে। এখন তাদের আর কিছুই নেই।
শ্রমিক ইব্রাহিম বলেন, টঙ্গীবাড়ি উপজেলার গারুরগাঁও গ্রামে বাড়ি ছিল তার। ছিল ১৫ বিঘা কৃষি জমিও। ওই সমস্ত জমিতে শ্রমিক নিয়ে ফসল উৎপাদন করতো। ধান, রবি মৌসুমে শাক সবজিসহ আরও কত কি। এখন বৃদ্ধ বয়সে এসে, নিজেই পরের জমির শ্রমিক। প্রায় ২০ বছর আগে সর্বনাশা পদ্মার ব্যাপক ভাঙ্গনে ভিটে-মাটি, কৃষি জমি সব বিলিন হয়ে গেছে। পরিবার নিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন পাশের পাচঁগাও গ্রামের মিলন চেয়ারম্যানের বাড়িতে।
সে নিজের ঘর উত্তোলন করে চেয়ারম্যান বাড়ি থাকলেও, ভিটি ভাড়া দিতে হয় তাকে। একমাত্র ছেলে বিল্লাল আখের মেশিনে কাজ করে। এতে যা বেতন পায় তা দিয়ে সংসার চলে না। তাই বৃদ্ধ বয়সেও কাজ করতে হয় তাকে।
তিনি আরও বলেন, বয়স হয়েছে। তাই আগের মতো ভাড়ি কাজ করতে পারেন না। তবে বর্তমানে শ্রমিক সংকট থাকায় নিয়মিত কাজ পান তিনি। ইব্রাহিম শেখ উপজেলার গারুরগাঁও গ্রামের মৃত খাদিম আলী শেখের ছেলে।
সান নিউজ/এনকে