এস এম রেজাউল করিম, ঝালকাঠি: ঝালকাঠি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেগুলোতে প্রশিক্ষণ নিয়ে আত্বকর্মী ও স্বাবলম্বী হচ্ছেন অনেকে। বিশেষ করে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের পরিচালিত যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে হাঁস মুরগি ও গরুর খামার করে জেলায় অনেক আত্বকর্মী সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে পেয়েছেন জাতীয় যুব পুরস্কারও। যুব উন্নয়ন অধিপ্তর জানিয়েছে এ সম্ভাবনাকে ধরে রাখতে তারা যুব ঋণ প্রদানসহ তাদের কাজের পরিসর আরও বৃদ্ধি করবেন।
আরও পড়ুন: নতুন ওয়েব সিরিজে চঞ্চল
২০০০ সালে যাত্রা শুরু করে ঝালকাঠি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে সম্পূর্ণ আবাসিক যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও যুব উন্নয়নের অন্যান্য অনাবাসিক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। ঝালকাঠি শহরের বরিশাল-খুলনা মহসড়কের পাশে স্থাপিত এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে জেলায় আত্বকর্মী ও স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেকে। বিশেষ করে যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গবাদি পশু, হাঁস-মুরগি পালন, মৎস্যসহ কৃষি সংশ্লিষ্ঠ বিষয় ৩ মাসের আবাসিক প্রশিক্ষণ নিয়ে অনেকেই এখন সফল উদ্যেক্ত্ াও আত্বকর্মী হয়েছেন।
যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ছাড়াও একই ক্যাম্পাসে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের অধীনে পরিচালিত বিভিন্ন ট্রেডে অনাবাসিক প্রশিক্ষণ নিয়েও কর্মী হচ্ছেন অনেকে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে, আইসিটি, রেফ্রিজেশন, ইলেক্ট্রনিক্স, বিউটিফিকশন ও আউট সোর্সিং।
যুব উন্নয়ন সূত্র জানায়, এ পযর্ন্ত আবাসিক-অনাবাসিক মিলিয়ে প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখান থেকে মোট ১৭ হাজার ১৪৫ জন আত্বকর্মী বের হয়েছে। তারা এখন সকলেই স্বাবলম্বী।
এর মধ্যে সফল আত্বকর্মী ও শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠক ক্যাটাগরীতে জাতীয় যুব পুরস্কার পেয়েছেন ১১ জন। এ পর্যন্ত আত্বকর্মীদের মধ্যে যুব ঋণ বিতরণ করা হয়েছে ১৫ কোটি ৪১ লাখ ৪৬০ টাকা।
আরও পড়ুন: শ্রীলঙ্কায় জরুরি অবস্থা প্রত্যাহার
ঝালকাঠির ইছানিল এলাকার তানভীর নামে একজন আত্বকর্মী ও সফল উদ্যেক্তার খামারে গিয়ে দেখা যায়, যুব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে প্রশিক্ষণ নিয়ে এবং সেখান থেকে ঋণ নিয়ে তিনি সফল খামারি হয়েছেন। তার খামারে গরু ছাগল দুটিই রয়েছে। তিনি তার খামারকে আরও প্রসারিত করতে চাইছেন। এভাবে অনেক তানভীরই রয়েছে জেলায় যারা যুব উন্নয়নে প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন সফল আত্বকর্মী হয়েছেন।
জাতীয় পর্যায়ে পুরস্কারপ্রাপ্ত সৈয়দ এনামুল হক বলেন, গবাদি পশু পালনে যখন লোকসান গুনতে ছিলাম, ঠিক তখনই ৫ বছর পূর্বে যুব উন্নয়ন থেকে ৩ মাস মেয়াদি কৃষি, মৎস, প্রাণী সম্পদ ট্রেডে প্রশিক্ষণ নেন। প্রশিক্ষণ নিয়ে বর্তমানে আম, লিচু, মাল্টাসহ বিভিন্ন ফলের বাগান করেন। সবজি চাষ করছেন। মুরগি, ছাগল, গরু, কবুতর, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ পালন করছেন। একই সাথে মুরগির বাচ্চা ফোটানোর মেশিনও স্থাপন করছেন। দুর দুরন্ত থেকে এসে তার পুকুরের মাছ নিয়ে যাচ্ছেন মৎস ব্যবসায়ীরা। সবজি, মুরগি, ছাগল, গরু, কবুতর যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। তার খামার থেকে ফুটানো মুরগির বাচ্চা যাচ্ছে বিভিন্ন ব্রয়লার খামারে।
আরও পড়ুন: গণমাধ্যমের সঙ্গে সংলাপে ইসি
ঝালকাঠি যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর উপপরিচালক ফারিয়া নিশাত, যুবকদের দক্ষতা বৃদ্ধি ও আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টিতে যুব উন্নয়ন কাজ করে যাচ্ছে। ৪০ হাজার যুবক বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জাতীয় পর্যায়ে সফল আত্বকর্মী ও শ্রেষ্ঠ যুব সংগঠকের পুরস্কার পেয়েছেন অনেক যুবক। জেলায় আরও অধিক সংখ্যক আত্বকর্মী তৈরী করার জন্য কাজের পরিসর আরও বাড়ানো হবে। এছাড়া যুব ঋণের পরিমাণ ও আরও বৃদ্ধি করার পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
সাননিউজ/এমআরএস