শফকি স্বপন, মাদারীপুর : মাদারীপুর জেলার শবিচর উপজেলা শহরে যেন পুরো একদিনের সময় নিয়ে বের হতে হয় উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন তিনটি ইউনিয়নে জনসাধারণ।
আরও পড়ুন: ভূমিকম্পে কাপল জাপান, নিহত ২
অথচ উপজলো সদর থেেক তিনটি ইউনিয়নের দূরত্ব র্সবোচ্চ দশ কিলোমিটার। কোন কোন এলাকা থেকে মাত্র ৫/৬ কিলোমিটারের পথ। অথচ বহমান আড়য়িাল খাঁ নদ এই দূরত্বকে বাড়িয়ে তুলেছে বহুগুণ। শুধুমাত্র একটি সেতুর অভাবে যুগ যুগ ধরে শবিচর উপজলো সদর থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে শরিুয়াইল, নলিখী ও দত্তপাড়া ইউনিয়। র্বতমানে এই নদের উপর নির্মাণ হচ্ছে সেতু। সেতুটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে দূর্ভোগ দূর হবে তিন ইউনিয়নে অসংখ্য মানুষের। তাই সেতুটি নিয়ে নদী পাড়ের মানুষের উৎসাহ ব্যাপক!
জানা গেছে, যুগ যুগ ধরে নৌকা-ট্রলারে করে নদী পাড় হয়ে যোগাযোগ রক্ষা করতে হচ্ছে উপজেলা সদরের সাথে। ঘন্টার পর ঘন্টা নদের পাড়ে অপেক্ষা করা, সন্ধ্যার পর নদী পাড় হতে পারত না। শিবচর সদরের সাথে যোগাযোগে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে, উপজেলার তিনটি ইউনিয়সহ আশপাশের এলাকার অসংখ্য মানুষকে। সম্প্রতি আড়িয়াল খাঁ নদের উপর নির্মাণাধীন লিটন চৌধুরী সেতুটি নির্মাণ শেষ হলে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমূল পাল্টে দেবে বলে জানান এলাকাবাসী। এবং একই সাথে দীর্ঘ দিনের ভোগান্তি দূর হবে সাধারণ মানুষের।
সংশ্লষ্টি সূত্রে জানা গেছে, শিবচর উপজেলা কোল ঘেঁষে বয়ে যাওয়া আড়িয়াল খাঁ নদ উপজেলার দত্তপাড়া, শরিুয়াইল ও নলিখী ইউনিয়নকে উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। যদিও ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক দিয়ে সড়ক পথে উপজেলা সদরে পৌঁছানো যায়। তবে তাতে সময় এবং দূরত্ব বেড়ে যায় অনেক। আড়িয়াল খাঁ নদ পার হয়ে গেলে মাত্র ১৫ মিনিটেই উপজেলা শহরে পৌঁছানো যায়। নদী পাড় হয়ে উপজেলা সদর মাত্র ৫ কিলোমিটার। আর মহাসড়ক ঘুরে গেলে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার পথ! নদীতে সেতু না থাকায় নদী পাড় হতেই বাড়তি হয়রানির শিকার হতে হয় সাধারণ মানুষকে। তবে মানুষের এই ভোগান্তি দূর হবে অচিরেই। আড়িয়াল খাঁ নদের উৎরাইল শিবচর অংশে নির্মিত হচ্ছে ৫ শত ৫০ মিটার দৈর্ঘের একটি সেতু এবং সংযোগ সড়ক। র্বতমানে সেতুটির নিমার্ণ কাজ চলমান রয়ছে।
আরও পড়ুন: বঙ্গবন্ধু ছাড়া দেশের স্বাধীনতাকে কল্পনা করা যায় না
শিবচর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধদিপ্তর (এলজইিড) সূত্রে জানা গেছে, চুক্তি অনুযায়ী ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের ১২ তারিখে সেতুটি নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এবং শেষ হবে ২০২২ সালরে অক্টোবরের ২২ তারিখ । র্বতমানে সেতুটি নির্মাণ কাজ এগিয়েছে ৭৫ ভাগ। সেতু নির্মাণ প্রাক্কলতি মূল্য ধরা হয়েছে ৯০ কোটি ২৭ লক্ষ ৭৭ হাজার ৯২৪ টাকা এবং চুক্তিমূল্য ৯৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা। দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে সেতুটির নির্মাণ কাজ করছে।
সংশ্লষ্টি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসের শেষের দিকে সেতুটির ভিত্তি প্রস্তর উন্মোচণ করনে জাতীয় সংসদরে চফি হুইপ নূর ই আলম চৌধুরী এমপি। সেতুটির নামকরণ করা হয় লিটন চৌধুরী সেতু। ৫৫০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯.৮০ মিটার প্রস্থরের সেতুটির স্প্যান সংখ্যা ১১টি এবং পিয়ার ৯ট। সেতুটির পাইলরে সংখ্যা ১২৩ টি, পাইলরে দৈর্ঘ্য ৪৮ মিটার। সেতুর জন্য এ্যাপ্রোচ সড়করে দৈর্ঘ্য ১.৫০ কিলোমিটার।
স্থানীয়রা জানায়িছেন, লিটন চৌধুরী নামের সেতুটির নির্মাণ কাজ শেষ হলে শিবচর উপজেলা সদরের সাথে শরিুয়াইল ইউনিয়নের উৎরাইল, সাদকোবাদ, সিপাইকান্দ, শরিুয়াইলসহ অন্যান্য গ্রাম, নিলখী ইউনিয়নে এবং দত্তপাড়া ইউনিয়নে গুয়াগাছিয়া, মগড়া, শৈল্যা, তাজপুর, বাজহোরচরসহ অন্যান্য এলাকা এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার আজিমনগর ইউনিয়ন পাতরাইল- দিঘিপাড় এলাকার অসংখ্য মানুষের জন্য শিবচর যাতায়াত সহজতর হয়ে উঠবে। এসকল এলাকার লক্ষাধিক মানুষের উপজেলায় সদরে যাওয়ার দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তনের মাধ্যমে এই সকল এলাকার উন্নয়নও তরান্বতি হবে বলে স্থানীয়দরে প্রত্যাশা।
আরও পড়ুন পানামার পতাকাবাহী ৩ জাহাজে রুশ হামলা
উৎরাইল মহিলা দাখিল মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষক জানান, আগে নদীর অপর পাড়ের এলাকা থেকে আমাদের মাদ্রাসায় অসংখ্য মেয়েরা পড়তে আসতো। কন্তিু নদী পাড় হওয়ার ভোগান্তি, র্বষা মৌসুমে বৃষ্টি ও স্রোতরে কারণে ঝুঁকি বিবেচনা করে ইদানিং কমে গেছে ছাত্রীর সংখ্যা। সেতুটি নির্মাণ হলে নদীপাড়ের গ্রামের শিক্ষার্থীরা সহজইে এখানে এসে লেখাপড়া করতে পারবে।
দত্তপাড়া ইউনিয়নে চেয়ারম্যান মুরাদ মিয়া জানান, সেতুটি চালু হলে যোগাযোগরে আমূল পরর্বিতন হবে। শিবচরের সাথে যাতায়াত সহজ হয়ে যাবে। এ এলাকার নানা ধরনরে উন্নয়ন তরান্বতি হবে।
আরও পড়ুন: রাশিয়ার ১৩ হাজার সেনা নিহত
উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী কে এম রেজাউল করিম বলেন, আড়িয়াল খাঁ নদের লিটন চৌধুরী সেতুর নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী নির্মাণাধীন সময়ইে কাজ শেষ করার কথা রয়েছে। সেতুটির নির্মাণ কাজ এগিয়েছে ৭৫ ভাগ।
সাননিউজ/এমআরএস