আমিরুল হক, নীলফামারী: নীলফামারীর সৈয়দপুর শতবছরের ঐতিহ্যবাহী সাংষ্কৃতিক ও একমাত্র বিনোদন কেন্দ্র রেলওয়ে মূর্তজা ইন্সটিটিউট এখন কাপড় ব্যবসায়ীর গুদাম ঘর। নিয়ম বহির্ভূতভাবে গোপনে এই ইন্সটিটিউটটি ভাড়া দিয়েছে পরিচালনা পরিষদ। বিনিময়ে প্রতিমাসে মোটা অংকের ভাড়ার টাকা তুলে পকেটস্থ করছেন কয়েকজন। এতে সাংষ্কৃতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মাঝেও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরও পড়ুন: সুচরিতা আমার মায়ের মতো
থিয়েটার সৈয়দপুরের সভাপতি ও সৈয়দপুর সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ হাফিজুর রহমান হাফিজ বলেন, মূর্তজা ইন্সটিটিউট সৈয়দপুর শহরের সাংষ্কৃতিক অঙ্গনের অন্যতম বিনোদন কেন্দ্র। বিশেষ করে রেলওয়ে বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিনোদনের প্রধান চত্বর। একসময় এই প্রষ্ঠিানটিই ছিল তাদের মিলনমেলা। এখনও বিভিন্ন দিবস ও উৎসবে এখানেই আয়োজন করা হয় অনুষ্ঠান। সমাবেশ ঘটে সংস্কৃতিপ্রেমীসহ সর্বস্তরের মানুষের।
সরেজমিনে দেখা যায়, মূর্তজা ইন্সটিটিউটের মূল হলরুম ছাড়া পাশের ক্লাবরুম, অতিথি রুম, রিহার্সাল রুম, কস্টিউম রুমে থান কাপড়ের গাট্টিতে ঠাসা। প্রতিটি রুমে লাখ লাখ টাকার মাল। কয়েজন নারী শ্রমিক সেখানে কাজ করছেন।
এ সময় উপস্থিত ইন্সটিটিউটের কেয়ার টেকার আখতার জানান, গত তিন মাস হলো স্থানীয় কাপড় ব্যবসায়ী নাদিম আকতার এখানে কাপড় কাপড় রেখে ব্যবসা করছেন।
জানতে চাইলে কাপড় ব্যবসায়ী নাদিম আকতার বলেন, ভাড়া নিয়ে কাপড় রাখছি। তাতে কার কি? প্রতিমাসে ১০ হাজার টাকা ভাড়া দিচ্ছি। কিছু জানার থাকলে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেন। কিভাবে ভাড়া দিয়েছেন তারাই ভালো জানেন।
ইন্সটিটিউটের কোষাধ্যক্ষ রেজা হাসান জানান, সভাপতি ও সম্পাদকরে অনুমতিক্রমে কমিটির তহবিল উন্নয়নের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে। প্রতিমাসে নিয়মিত ভাড়া আদায়ও করছি। এতে তো আয় বেড়েছে। যা দিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রয়োজনীয় ব্যয় নির্বাহসহ উন্নয়ন করা হবে।
আরও পড়ুন: ঢাকা ছেড়েছেন প্রধানমন্ত্রী
ইন্সটিটিউটের সাধারণ সম্পাদক ও রেলওয়ে উর্দ্ধতন উপসহাকারী প্রকৌশলী (পথ) তহিদুল ইসলামকে মোবাইল ফোনে জানান, টাকার প্রয়োজনে ভাড়া দেয়া হয়েছে। তাতে কি সমস্যা? হলরুম তো খালিই আছে। সেখানে সভা সমাবেশ বা অনুষ্ঠান অনায়াসেই করা যায়। অন্যরুমগুলো কোন কাজে লাগেনা তাই ভাড়া দিয়েছি। এখানে নিয়ম অনিয়মের কি আছে? বিষয়টি কমিটির সবাই জানে।
এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ও ইন্সটিটিউটের সভাপতি আহসান উদ্দীন বলেন, ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। কোনভাবেই এটি স্থায়ী ভাড়া দেয়ার সুযোগও নেই। শুধু সামাজিক, সাংষ্কৃতিক, রাজনৈতিক ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান করতে নির্দিষ্ট কয়েক দিনের জন্য ভাড়া দেয়া যাবে।
আরও পড়ুন: শবনম বুবলীর চমক
তিনি আরও বলেন, সভাপতি হলেও আমি নিয়মিত যাইনা বা কোন বিষয়েই ওতপ্রোতভাবে খোঁজখবর রাখা হয় না। সব সাধারণ সম্পাদকই তদারকি করেন।
পরে সৈয়দপুর রেলওয়ে বিভাগের প্রধান রেলওয়ে কারখানার বিভাগীয় তত্বাধায়ক (ডিএস) সাদেকুর রহমান কে অবগত করা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি। এগুলোর বিষয়ে এখনও ভালোভাবে জানা হয়নি। জেনে নিয়ে সে অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সান নিউজ/এমকেএইচ