নিজস্ব প্রতিবেদক: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর দেশের অন্যতম শীর্ষ একটি বিদ্যাপীঠ। প্রাণ প্রকৃতির জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খ্যাতি দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বহির্বিশ্বে পৌঁছেছে। শীতের অতিথি পাখি, লেকের লাল শাপলা, শান্ত শ্যামল প্রকৃতি, দিনের আলোতে শিয়ালের আনাগোনা- এসবের কারণে প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয়টি আগ্রহের অন্যতম এক কেন্দ্র।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি পরতে পরতে লুকিয়ে আছে সৌন্দর্য। এখানে ছোট বড় ১৭ টি লেক রয়েছে। জাবির মেডিকেল সেন্টারের ঠিক সামনেই আছে ব্রিজ। ব্রিজের পাশে পদ্ম ফোঁটা লেক, হরেক রকম গাছ-গাছালি, নানা রকম প্রাণী, লাল মাটি, উঁচু নিচু রাস্তার কারণে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রাজধানী বলা হয় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে।
জাবির লেকগুলোতে ফুঁটে থাকা লাল লাল শাপলা কিংবা আগাছার ধবধবে সাদা ফুলগুলো যে কোনো প্রকৃতিপ্রেমী মানুষের মনে আনন্দ যোগায়। অগ্রহায়ণের শুরু থেকেই শাপলা ফুটতে শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১৭টি লেক থাকলেও পাঁচটি লেকে লাল শাপলা ফোটে। মুক্তমঞ্চসংলগ্ন লেক, পুরোনো প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, পরিবহন চত্বরের পেছনের লেক, সুইমিং পুলসংলগ্ন লেক ও মুন্নী সরণিসংলগ্ন লেকে লাল শাপলা বেশি দেখা যায়।
দূর থেকেই দর্শনার্থীদের চোখে ধরা দেয় বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফুটে থাকা শাপলা। এ যেন নৈসর্গের নিজ হাতে দান। লাল শাপলা বা রক্ত কমল খুব ভোরে ফোটে এবং বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পাঁপড়ি বুজে যায়। তাই শাপলার এ সৌন্দর্য উপভোগ করতে চাইলে উঠতে হবে খুব ভোরে। প্রতিটি কাণ্ডে একটি করে ফুল ফোটে। পাতা পানিতে ভেসে থাকে, আর কাণ্ড পানির নিচে মাটির সঙ্গে যুক্ত থাকে। পাতাগুলো গোল ও সবুজ বর্ণের হয়, কিন্তু নিচের দিকে থাকে কালো রং। শীতের শেষে যখন লেকের পানি শুকিয়ে যায়, তখন সব শাপলা মরে যায়। পরবর্তী বছর মাটিতে থেকে যাওয়া গোড়া ও মোথা থেকেই আবার জš§ নেয় লাল শাপলা।
আরও পড়ুন: পরীমনির মামলা স্থগিত
বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিভাগের তথ্যমতে, লাল শাপলা , এটি শাপলা পরিবারের একটি জলজ উদ্ভিদ। বাংলাদেশের নিজস্ব এ প্রজাতিটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়। আগস্ট-জানুয়ারি মাস এ ফুল ফোটার জন্য উপযুক্ত সময়। পাতা ও বোঁটা লালচে সবুজ। ফুল ১০-২০ সেমি চওড়া, অনেকগুলো পাপড়ি ও পাপড়ির রং লাল। এ ফুল রাতে ফোটে। গোলাকার ফলে অনেক ছোট ছোট বীজ হয়। বীজ খাওয়া যায়। গোঁড়ার চারা থেকে চাষ করা যায়।
প্রকৃতির নিয়ম মেনেই প্রতিবছর লাল শাপলা মুগ্ধতা ছড়িয়ে যাচ্ছে। তেমনি আমাদেরও দায়িত্ব লাল শাপলা সংরক্ষণের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা।
সাননিউজ/এমআরএস