ফিচার ডেস্ক :
বিশ্ব করোনা মহামারির এই সময়ে করোনা থেকে বাঁচতে সবাই সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলছেন।
কিন্তু ভালোবাসার টানে এই সময় কেউ প্রিয়জনকে জড়িয়ে ধরতে চাইলেও পারছে না। কারণ অদৃশ্য এক ভাইরাসে তটস্থ সবাই।
এমনই এক করুণ সময়ে দক্ষিণ ব্রাজিলের একটি বৃদ্ধাশ্রমের প্রবীণ ব্যক্তিদের জন্য তৈরি করা হয়েছে ‘হাগ টানেল’ বা ‘আলিঙ্গন সুড়ঙ্গ’।
এর মধ্য দিয়ে প্রবীণরা তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে দেখা করে জড়িয়ে ধরার সুযোগ পাচ্ছেন। যেন কত কাছে, তবুও যেন মন খুলে ছুয়ে দেখার সে সৌভাগ্য কারো নেই।
এই সুড়ঙ্গের মধ্য দিয়েই প্রবীণরা তাদের ছেলে-মেয়ে, নাতি কিংবা ভাই-বোনসহ আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে দেখা করছেন ও জড়িয়ে ধরে অনেকটাই মানসিকভাবে প্রশান্তি পাচ্ছে। যেন দুধের স্বাদ ঘোলে মেটানো।
হাগ টানেলের এই ধারণাটি গত মাসে মা দিবসের পরপরই চালু হয়। সেখানকার বৃদ্ধারা মা দিবসেও যখন নিজেদের সন্তানদের জড়িয়ে ধরতে পারেননি তখন থেকে তারা বিমর্ষ হয়ে পড়েন। এর পরই বৃদ্ধাশ্রম কর্তৃপক্ষ এই নয়া কৌশল বের করেন।
বৃদ্ধাশ্রমের লুসিয়ানা ব্রিটো বলেন, আমরা মা দিবসে লক্ষ্য করি তারা সন্তানদেরকে জড়িয়ে না ধরতে পেরে মর্মাহত হচ্ছেন। আমরা ভেবেছিলাম, যদি কোনো উপায়ে আত্মীয়দের সঙ্গে তাদের আলিঙ্গনের ব্যবস্থা করে দেয়া যেত তাহলে ভালো হত। এরপর এ ব্যবস্থা করা হয়। আর আমাদের এই উদ্যোগে এখন সবাই খুশি।
ব্রিটেন আরো বলেন, ‘আলিঙ্গনের সুড়ঙ্গ এর ধারণাটি একটি ভাইরাল ভিডিও থেকে এসেছে। যেখানে মার্কিন এক নারী তার মাকে জড়িয়ে ধরার জন্য একটি প্লাস্টিকের পর্দা তৈরি করেছিলেন।
এই হাগ টানেলে চারটি ছিদ্রযুক্ত বাহু রয়েছে। একটি বৃহৎ প্লাস্টিকের শীট রয়েছে। যাতে দুই পাশের ব্যক্তিরা সুরক্ষিত থাকেন। পলিথিনের এপাশ ও ওপাশ থেকে দুজন ব্যক্তিই কথা বলতে ও জড়িয়ে ধরতে পারবেন।
বৃদ্ধাশ্রমে বসবাসরত ৮১ বছর বয়সী অবসরপ্রাপ্ত এরাল্ডো কুইন্টানা বলেন, এটি একটি দুর্দান্ত আবিষ্কার। সত্যিই আমরা প্রিয়জনদের সংস্পর্শে না আসায় আরো অসুস্থ হয়ে পড়ছিলাম।
তিনি বলেন, এই উপায়ের মাধ্যমে এখন আমরা প্রিয়জনদের জড়িয়ে ধরে মানসিকভাবে হালকা হতে পারছি। সূত্র: সিএনএন
সান নিউজ/সালি