মো. নাজির হোসেন, মুন্সীগঞ্জ: মুন্সীগঞ্জে বোরো ধান আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকেরা। চলিত মৌসুমে কৃষক ধানের দাম ভাল পাওয়ায় আবাদের লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে সংশিষ্ট কৃষি সম্পাসারণ বিভাগ মনে করছে। বর্তমানে জেলার ছয়টি উপজেলায় চলছে বোরো আবাদের মৌসুম। আর বোরো আবাদের কারণে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। মাঘ মাসে কুয়াশা ঢাকা শীতের সকাল হিমেল হাওয়া উপেক্ষা করে কৃষকরা বোরো ধানের চারা রোপনের ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বিস্তীর্ণ মাঠ জুরে বোর আবাদের ধুম চলছে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জেলায় ২১/২২ মৌসুমে ২৪ হাজার ৫০ হেক্টর লক্ষ্যমাত্রা। উৎপাদন ১ লাখ ৭১৯ মেট্রিকটন। সদর উপজেলায় ৮শ ৪১হেক্টর, টঙ্গীবাড়ি উপজেলায় ২ হাজার ৪৫৫ হেক্টর।
লৌহজং উপজেলায় ২ হাজার ৭৯৩ হেক্টর, সিরাজদীখান উপজেলায় ৪ হাজার ৬৪০হেক্টর, শ্রীনগর উপজেলায় ১০ হাজার ৮০৯ হেক্টর ও গজারিয়া উপজেলায় ২ হাজার ৫১২ হেক্টর। এ বছর ৪৫ হেক্টর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা বেশি। এ পর্যন্ত ৯ হাজার ৯০১ হেক্টর আবাদ হয়েছে জেলায়। গত ২০/২১ মৌসুমে জেলায় ২৪ হাজার ৫ হেক্টর আবাদ হয়েছে। উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ২৭৮ মেট্রিক টন ধান।
আরও পড়ুন: নাওডোবা ইউনিয়নকে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তুলতে চাই
সরেজমিনে দেখা গেছে, ভোরের আলো ফুটতেই কোমর বেঁধে ফসলের মাঠে নেমে পরেছে কৃষকরা। যদিও গত কয়েক দিন থেকে শীতের তীব্রতা কিছুটা রয়েছে সদর উপজেলায়। বীজতলায় ধানের চারা পরিচর্যার পাশাপাশি জমি চাষবাদের কাজ চলছে পুরোদমে। বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠে ধানের কচি চারার সবুজ গালিচা, কোথাও গভীর নলকুপ থেকে চলছে পানি সেচ, ট্রাক্টর, পাওয়ার টিলার দিয়ে চলছে জমি চাষের কাজ।
আবার কৃষক নদী থেকে নালা পদ্ধতিতে পানি সংগ্রহ করেছেন। আবার বোরো ধানের রোপণের জন্য বীজতলা থেকে তোলা হচ্ছে ধানের চারা। কৃষকের ব্যস্ততায় শীত যেন তাদেরকে স্পর্শ করছে না। শরীরে রয়েছে হালকা পোষাক, মাথায় গরম কাপড়। সব মিলিয়ে ফুরফুরে মেজাজ বোরো আবাদে ব্যস্ত কৃষক। কিছু কিছু মাঠে জমির রোপণে কাজ সম্পন্ন হয়েছে।
সদর উপজেলা আধারা ইউনিয়নের কৃষক জাব্বার ছৈয়াল বলেন, গত বছরের তুলনায় চলিত বছরে ধানের দাম বেশি হওয়ায় বেশি ভাগ কৃষকরা বোরো চাষে ঝুঁকে পড়েছে। অনেক কৃষক ভুট্টা, সরিষা চাষ না করে বোরো চাষ করছে। এই জন্য ধারণা করা হচ্ছে লক্ষমাত্রা চেয়ে বেশি বোরো ধান আাবাদ করছে কৃষকরা।
আরও পড়ুন: দখল মীমাংসায় ঘুষ চাইলেন ওসি, আদালতে মামলা
এখানকার কৃষকদের বৃষ্টিতে আলু বীজতলা নষ্ট হওয়াতে, নতুন করে অনেকে হাইব্রিড বোরো ধান আবাদ করেছেন। বর্তমানে ন্যায় শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে চলতি মৌসুমে বোর ধানের বাম্পার ফলন হবে।
গজারিয়া উপজেলার কৃষক জাহিদ বেপারী বলেন, আমি এ বছর বোরো মৌসুমে দুই কানি ধান চাষ করেছি। আমাদের এ উপজেলায় ধান ভালো হলে কানিতে ৩০ থেকে ৩২ মণ ধান পাওয়া যাবে। গতবছর শেওলা কারণে উপজেলার অনেক বোরো ধান চারা নষ্ট হয়েছিল। আশা করছি এ বছর এমন যেন না হয়। আমরা জোয়ারের পানি উঠা নামায় লক্ষ্য রাখছি।
জেলা কৃষি সম্পাসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. খোরশেদ আলম জানান, এ মৌসুমে ২৪ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা। ১ লাখ ৭১৯ মেট্রিকটন উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। জেলার ৮ হাজার কৃষকের মাঝে হাইব্রিড ও উপশী জাতের ধান বিজ প্রণোদনা দেয়া হয়েছে। জেলার ছয় উপজেলার কৃষি অফিসারগণ প্রতিনিয়ত কৃষকদের খোঁজ খবর নিচ্ছে।
সান নিউজ/এমকেএইচ