ফিচার

চোরাই মোবাইল উদ্ধারের জাদুকর ওবায়দুর

আমিরুল হক, নীলফামারী: হারানো মোবাইল খুঁজে বের করাই ওবাইদুর রহমানের নেশা। ইতোমধ্যে ছিনতাই অথবা হারিয়ে যাওয়া অন্তত তিনশ মোবাইল উদ্ধার করে প্রকৃত গ্রাহকের হাতে তুলে দিয়েছেন তিনি।

সৈয়দপুর থানা সূত্রে জানা যায়, মোবাইল হারানোর সাধারণ ডায়েরি হলেই ডাক পড়ে ওবাইদুর রহমানের। মরুভূমিতে সুই খোঁজার চ্যালেঞ্জ নিয়ে মাঠে নেমে পড়েন তিনি। কর্মক্ষেত্রের ব্যস্ততায় কখন সকাল গড়িয়ে দুপুর বা বিকেল হয় তা খুব একটা টের পান না।

তিনি ২০০৩ সালে কনস্টেবল হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। দীর্ঘ ১৮ বছরের চাকরি জীবনের অর্ধেকের বেশি সময় পার করেছেন হারানো মোবাইল উদ্ধারের নেশায়। ২০১৯ সালে এ থানায় যোগদান করেন। বিগত দুই বছরে শুধু সৈয়দপুর থানার জিডির বিপরীতেই ৩০০ মোবাইল গ্রাহককে ফিরিয়ে দিয়েছেন তিনি। কোনোটিতে সময় নিয়েছেন দুই থেকে পাঁচ দিন, কোনোটির জন্য দুই বছর। মোবাইল উদ্ধারের ক্ষেত্রে বাজারমূল্য তার কাছে তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়।

করোনায় যখন সারা বিশ্ব স্থবির। বন্ধ হয়ে যায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পরে প্রায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো চালু করে অনলাইনে ক্লাশ। ফাতেমা থাকেন সৈয়দপুর উত্তরা আবাসনে। পিতাহারা নবম শ্রেণীতে পড়ুয়া মেয়ের জন্য স্মাট ফোন কিনে দিতে হবে। এ কথা শুনে দিন-রাত মানুষের কাপড় সেলাই করে টাকা জমিয়ে মেয়ের জন্য একটি স্মাট ফোন কিনেন। কিন্তু মোবাইল ফোন কেনার এগার দিন পরই তার বাড়ি থেকে চুরি হয়ে যায় মোবাইলটি।

সেদিন ওই নারীর কান্না দেখে মনে দাগ কেটে যায় এএসআই ওবায়দুরের। তিনি মনে মনে ঠিক করেন, যেভাবেই হোক ওই নারীর মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করবেনই। অবশেষে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রায় দুই মাস পরে ওই নারীর মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করেন তিনি। হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোনটি হাতে পেয়ে সেদিনও খুশিতে কেঁদেছিলেন ওই নারী।

আরেকজন ভূক্তভোগী রাজ্জাকিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল আলম বলেন, আমার ফোন হারিয়ে যাওয়ায় সৈয়দপুর থানায় জিডি করি। ফোনটি পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছিলাম। কিন্তু চার বছর পর যখন পুলিশ অফিসার ওবাইদুর রহমান ফোন উদ্ধার হওয়ার বিষয়টি জানান তখন প্রথমে বিশ্বাসই হচ্ছিল না। পরে তিনি আমার হাতে ফোনটি তুলে দেন।

ওবাইদুর রহমান বলেন, অনেক সময় গরীব রিকসাওয়ালা কিংবা শ্রমিকরা তাদের হারানো ফোন উদ্ধারের আশায় জিডি করেন। সমান গুরুত্বের সাথেই আমি তাদের হারানো মোবাইল উদ্ধারের চেষ্টা করি। অনেক দামি জিনিস হারানোর চাইতে মোবাইল হারানোর কষ্ট অনেক বেশি। জিডি করার পর ফোন উদ্ধার করে ভুক্তভোগীকে ফোন দিলে তারা অনেকে বিশ্বাসই করতে চায় না। শখের মোবাইল ফোন হাতে পেয়ে তাদের আনন্দে মনটা ভরে ওঠে।

তিনি আরও বলেন, সত্যিকার অর্থে ভালো কাজ করলে মানুষের সম্মান এবং মানুষের দোয়া সব কিছুই পাওয়া যায়। পুলিশ মানুষের বন্ধু এবং জনগণের সেবক এই কথাগুলো এখন সাধারণ মানুষের মুখে মুখে। বাংলাদেশ পুলিশ এখন জনগণকে সেবা দিতে জনগণের দরজায় হাজির থাকে।

সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান বলেন, ওবাইদুর রহমান একজন চৌকস পুলিশ অফিসার। জিডির ভিত্তিতে মোবাইল ফোন উদ্ধারে তিনি দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন। একজন অফিসার যখন এ রকম অর্জন করে তখন অবশ্যই আমরা আনন্দিত, গর্বিত হই। পুলিশ সদস্যরা যখন ভালো কিছু করে সেটা পুরো বাহিনীর সুনাম হয়।

সান নিউজ/এমকেএইচ

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

ঢাকায় বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি দল

নিজস্ব প্রতিবেদক : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাই...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

শেখ হাসিনাসহ ৬১ জনের নামে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : নারায়ণগঞ্জে আদালতের নির্দেশে সাবেক প্রধা...

গুমের সঙ্গে জড়িতরা পার পাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের কোথাও গুমের সঙ্গ জড়িতরা পার পায়নি...

বাংলাদেশিদের পাঁচ দেশ ভ্রমণে সতর্কতা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বিশ্বের ৫ দেশে যেতে চাওয়া বাংলাদেশিদের জন...

টস জিতে ফিল্ডিংয়ে বাংলাদেশ

স্পোর্টস ডেস্ক : দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে টস জিতে ও...

কলম্বিয়ায় গেরিলা হামলায় নিহত ৫

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কলম্বিয়ার আনোরিতে ন্যাশনাল লিবারেশন আর্ম...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা