মেহেদী হাসানঃ সাভার থেকে
রাজধানীর মিরপুরে তুরাগ নদী ঘেঁষে দ্বীপ গ্রাম বিরুলিয়া। এই গ্রামের নামে গড়ে উঠা ইউনিয়নের মেঠো পথে হাঁটলে মনে হবে এ যেন গোলাপ রাজ্য। গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই গোলাপের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।
এখানকার মাটি মেরিন্ডা জাতের লাল গোলাপ চাষের জন্য খুবই উপযোগী। আর একে ঘিরে গড়ে উঠেছে বানিজ্যিক ফুল চাষ। বিরুলিয়া ইউনিয়নের কালিয়াকৈর, বাগ্নিবাড়ি, মোস্তাপাড়া, কাকাবর, সামাইর, সাদুল্লাহপুর, শ্যামপুর, আকরাইন, সাভারের রাজাশন, কমলাপুরসহ অর্ধশত গ্রামের প্রায় দুই শতাধিক চাষি বর্তমানে গোলাপ চাষ করছেন।
সাভারের বাজারগুলোতে বিভিন্ন জাতের ফুলের মধ্যে রঙিন গ্লাডিওলাস, সাদা জাতের গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, মেরিন্ডি, লিংকন, সাদাসহ বিভিন্ন জাতের গোলাপ, গাঁদা, চন্দ্রমাল্লিকা, জিপসি, ক্যালেনডিনা, জারবেরা ফুলের সমারোহ দেখা যায়।
চাষীরা জানান বছরের শুরুতে ফুলের চাহিদা একটু বেশেই থাকে। আর এই সময়ের আয় দিয়েই তাদের সারা বছরের খরচ উঠে আসে। এ সময় দর্শনার্থীদের উপচেপরা ভীড় লক্ষ করা যায়। যেখানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলার ফুলের পাইকাররাও আসেন ফুল কিনতে। প্রচন্ড শীতে ফুলের উৎপাদন একটু কম হলেও চাহিদা ব্যাপক। প্রতিটা গোলাপ আট থেকে নয় টাকায় বিক্রী হয়।
সরেজমিন দেখা যায়, স্থানীয় ফুল ব্যবসায়ী ও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমাচ্ছেন মোস্তাপাড়া ফুল মার্কেটে। দূরদূরান্ত থেকে গোলাপ ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যায় এ ফুল মার্কেটে ভিড় জমান। মার্কেটে বেচাকেনা চলে প্রতিদিন সন্ধ্যার পর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত।বেচাবিক্রি শেষে রাত ৩টার দিকে ব্যবসায়ীরা ফুলগুলো ঝাঁকা ভরে পিকআপ এবং বাসে করে নিয়ে যান।
সারা বছর গোলাপের চাষ হলেও নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত গোলাপ ফুলের জমজমাট মৌসুম। লাল মাটি হওয়ায় তুলনামূলক বড় সাইজের গোলাপ ফুল চাষে ঝুঁকছেন এখানকার প্রান্তিক চাষিরা। লাভজনক ব্যবসা হওয়ায় ফুলচাষি এবং ব্যবসায়ীর সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। দুই শতাধিক চাষি আড়াই শ’ হেক্টর জমিতে ফুল চাষ করে এখন স্বাবলম্বী।
সাভার উপজেলা কৃষি অফিসার নাজিয়াত আহমেদ বলেন, সাভারে ৩০০ হেক্টর জমিতে গোলাপ ফুল চাষ হচ্ছে। এর মাঝে বিরুলিয়ায় সব চাইতে বেশী ফুল চাষ হয়। এগুলি বিক্রি করে কৃষকদের মুখে হাসি ফোটে। ফুল বাগানে যাতে কোন প্রকার পোকা মাকড়ের আক্রমন না হয় সে ব্যাপারে আমরা কৃষককে পরামর্শ দেই সব সময়।
সান নিউজ/সালি