ফিচার ডেস্ক: একটি জঙ্গল। আছে নানা প্রজাতির গাছ-গাছালি। রয়েছে হরেক রঙের পাখ-পাখালি। বলা যায় অনিন্দ্য সুন্দর এক জঙ্গল। ছোট ছোট খাল এই জঙ্গলকে করেছে অনন্য। ‘টোনোটিওয়াট’ নামের এই জঙ্গলে চাইলেই যে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।নারীদের ঢুকতে হয় নগ্ন হয়, পুরুষ প্রবেশ করলে গুনতে হবে ১০ লাখ টাকা!
টোনোটিওয়াট মানে হচ্ছে নারীদের অরণ্য। অবশ্য টোনোটিওয়াটের অর্থ ম্যানগ্রোভে স্বাগতও হতে পারে। ইন্দোনেশিয়ার পাপুয়ায় এই ম্যানগ্রোভটির অবস্থান। রাজধানী জয়পুরার ক্যামপাং এনগ্রোসের মাঝামাঝি ওই ম্যানগ্রোভ অরণ্য ছড়িয়ে আছে প্রায় ৮ হেক্টর এলাকাজুড়ে।
পাপুয়ার মানুষের পছন্দের খাবার ঝিনুক এবং নানা রকম ফলের জোগান দেয় এই অরণ্য। সেসব সংগ্রহ করে আনার কাজও মেয়েরাই করে থাকে।এই অরণ্যে পুরুষরা প্রবেশ করতে পারে শুধু কাঠ সংগ্রহের জন্য।
তবে পুরুষরা চাইলেই প্রবেশ করতে পারবেন না। আগে তাদের নিশ্চিত হতে হয় যে জঙ্গলে কোনো নারী নেই। নারী থাকাকালীন পুরুষরা জঙ্গলে প্রবেশ করলে নিয়ে যাওয়া হয় উপজাতি আদালতে। অপরাধ প্রমাণ হলে শাস্তির পাশাপাশি দিতে হয় গুনতে হয় ১০ লাখ টাকার বেশি!
এই জঙ্গলে মেয়েরা সম্পূর্ণ নগ্ন হয়ে প্রবেশ করে। জঙ্গল, জলাভূমিতে দল বেঁধে ঘোরেন। জঙ্গলে প্রবেশের পর একত্রিত হয়ে শপথ নেন জঙ্গলে থাকাকালীন কেউ কাউকে ছেড়ে যাবেন না। সমুদ্র লাগোয়া জঙ্গলের জলাভূমিতে নেমে ঝিনুক সংগ্রহ করেন মেয়েরা। কাদা জলে পোশাক নষ্ট হতে পারে ভেবেই হয়তো চালু হয়েছিল নগ্ন নামার এই নিয়ম।
তবে কবে থেকে এই নিয়ম চলে আসছে তা জানেন না কেউ। যদিও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, তাদের মা, নানীদের কাছেও এই একই কাহিনি শুনে আসছেন তারা। প্রচলিত কাহিনী থেকেই জেনেছেন এই জঙ্গলের সঙ্গে স্থানীয়দের সখ্যতা ১৮০৮ সাল থেকে।
জঙ্গলে যতক্ষণ নারীরা থাকেন, ততক্ষণ গলা ছেড়ে গান করেন। এই গান আসলে জঙ্গলে ভুল করে ঢুকে পড়া পুরুষের প্রতি সঙ্কেত। গান গেয়েই বলা ‘দূরে যাও, আমরা আছি।’
সাননিউজ/এএসএম