মুজিব রহমান
গেলো বার পদ্মায় একটি কাঠের তৈরি প্রণামরত-নারী ভাস্কর্য পাওয়া গেলে তা রাখা হয় বিক্রমপুর জাদুঘরে। কিন্তু ভাস্কর্যটা কী উদ্দেশ্যে তৈরি তা বিস্তারিত জানা যাচ্ছিলো না। ভাগ্যকুল পাঠাগার ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পাঠচক্রের সদস্য নিলীমা দাশ বিভিন্ন উৎস থেকে খবর নিয়ে জানান-
মৃত ব্যক্তির শ্রাদ্ধের অনুষঙ্গ হিসেবে এগারোটি কাজ করা হয়। অন্ন দান, ষোড়ষ, ভোজ্য, বিভিন্ন দান, তীর্থক্ষেত্র গয়া, কাশিতে জল দান ইত্যাদি।
প্রতিটি সনাতন পরিবার এগারোটি কাজ করতে না পারলেও অবশ্যই অন্তত দুটি কাজ করবেন। অন্নজল দান ও ষোড়শ শ্রাদ্ধের আবশ্যকীয় ষোল উপকরণ যোগাড় করবেন। বৃষোৎসর্গ শ্রাদ্ধে এই ভাস্কর্যও এই শ্রাদ্ধের একটি উপকরণ।
বেল গাছ বা ডুমুর গাছ দিয়ে এই ভাস্কর্য তৈরি করা হয়। বৃষ মানে ষাড়। অনেক আগে সম্ভ্রান্ত পরিবার মা-বাবার শ্রাদ্ধে ষাড় করতো। জমিদার পরিবারগুলো শ্রাদ্ধে রূপার বা স্বর্ণের দানসগার করতো। এরূপ শ্রাদ্ধে সেই বৃটিশ আমলেও লক্ষাধিক টাকা ব্যয় হয়ে যেতো। হিন্দু রীতিতে শ্রাদ্ধে বেশ খরচ হয়। স্বর্ণের বরণাঙ্গুরীয় থেকে লোহার ত্রিশূল পর্যন্ত বহু ধরনের উপহার দেয়া হয় এই বৃষোৎসর্গ করতে হয়।
আঞ্চলিক ভাষায় বৃষ শব্দকে বেশ্য বলা হয়। এই ভাস্কর্যটিকে বলে বেশ্য। এই বৃষোৎসর্গ শেষ হলে ভাস্কর্যটি জলাশয়ে ভাসিয়ে দেয়া হয়। শ্রাদ্ধ শেষে ভাসিয়ে দেয়া এমনই একটি বেশ্য হলো এই কাঠের ভাস্কর্য।
ভাস্কর্যটি বিক্রমপুর জাদুঘরে স্থাপন করা হয়েছে। কেউ জাদুঘরে প্রবেশ করলেই ভাস্কর্যটি তাকে স্বাগত জানাবে।
সান নিউজ/আরআই