নিয়ামুল ইসলাম, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাদুকা শিল্পের সূচনা ১৯৬৩ সাল থেকে। এরপর থেকে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আধুনিকায়নের মাধ্যমে সারা দেশ জুড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যবাহী পাদুকা শিল্পের আলাদা খ্যাতি রয়েছে। কিন্তু গত বছরের ক্ষতি কাটিয়ে উঠার অগেই আবারও নতুন করে লকডাউন দেয়ায় অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে জেলার ঐতিহ্যবাহী এ শিল্পটি।
বর্তমানে কারখানা চালু থাকলেও লকডাউনের জন্য বন্ধ রয়েছে দোকান ও শোরুম গুলো। এ ছাড়া জুতা তৈরির সোল, ফোম , আঠাসহ সব ধরনের উপকরণের দামও বেড়েছে । এতে উৎপাদন খরচও বেড়ে গেছে। এছাড়া দূর-দূরান্ত থেকে পাইকার আসতে না পারায় উৎপাদিত জুতা অবিক্রিত রয়ে যাচ্ছে। ফলে প্রতিদিনই বাড়ছে কারখানা গুলোর ক্ষতির পরিমান ।
সরেজমিনে ঘুরে জানা যায়, প্রতিবছর রোজার ২ মাস আগে থেকে শুরু করে কোরবানির ঈদ পর্যন্ত সময়টায় জেলার পাদুকা কারখানাগুলো হয়ে উঠে বেশ কর্মচঞ্চল । এ মৌসুমের অপেক্ষায় থাকেন পাদুকা মালিক ও কারিগররা । কিন্তু বাস্তবে করোনার প্রভাব ও প্রয়োজনীয় উপকরণের মূল্যবৃদ্ধি পাওয়ায় এখন টিকে থাকতেই হিমশিম খাচ্ছে এর সাথে জড়িতরা।
কারখানা মালিক সিদ্দিকুর রহমান ও মোহম্মদ আলী জানান, করোনার কারণে গত বছর তাদের ব্যবসা ভাল যায়নি । ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নতুন করে প্রস্তুতি নিলেও আবারও দ্বিতীয় বারের মত করোনা বেড়ে যাওয়ায় লক ডাউনের ফলে এ শিল্পের সাথে জড়িতরা এখন অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। তারা এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
কথা হয় বেশ কয়েকজন পাদুকা কারিগর বলেন, গত বছরের করোনার সময় আমরা যে ধার-দেনা করে খেয়েছি, সেটাই এখনো পরিশোধ করতে পারিনি। মনে করেছিলাম এবার কাজ কর্ম স্বাভাবিক ভাবে চললে তা পুষিয়ে নিতে পারব। কিন্তু আবারো লকডাউনে পরে আমরা এখন মানবেতর জীবন যাপন করছি । কারখানা মালিকরা জুতা তৈরি অনেকাংশে বন্ধ করে দিয়েছে।
জেলার পাদুকা শিল্প সভাপতি মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন, মাত্র কয়েক বছর আগেও জেলায় ৫ শতাধিক পাদুকা কারখানা থাকলেও এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫০টিতে। কোন রকমে টিকে থাকা অবশিষ্ট কারখানাগুলো চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
এসব কারখানার মধ্যে ১৬ টি অটোমেটিক মেশিন এবং বাকিগুলোতে হাতেই তৈরি হচ্ছে লেডিস, জেন্স ও শিশুদের জন্য বিভিন্ন ডিজাইনের জুতা। সরকারি সহায়তা না পেলে সম্ভাবনাময় এই শিল্পটিকে টিকিয়ে রাখাই দায় হবে।
সান নিউজ/আরএস