নিজস্ব প্রতিনিধি, সুনামগঞ্জ : প্রকৃতির অপরুপ সুন্দর্যের হাতছানিতে শীত কাটিয়ে এবার উষ্ণ পরশ দিতে ডানা মেলে সেজেছে ঋতুরাজ বসন্ত। সুনামগঞ্জের বৃহৎ শিমুল বাগানের এই সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রিয়জনদের সঙ্গে নিয়ে ছুটে আসছেন প্রকৃতি প্রেমীরা।
ষড় ঋতুর বাংলাদেশে বসন্তকাল যেন সার্থক হয়ে উঠেছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় যাদুকাটা নদীর তীরে।
প্রতি বছরের মতো এবারও ঋতুরাজ বসন্তে এই শিমুল বাগানের ৩ হাজার গাছ ছেয়ে গেছে লাল রঙের ফুলে ফুলে। প্রকৃতির এই অনন্য সুন্দর দৃশ্য প্রাণ ভরে উপভোগ করতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বাগানে ছুটে অসছেন সৌন্দর্য পিপাষু মানুষ।
প্রতিদিনই উৎসবের আমেজে লাল ফুলের রঙে সাজছে তরুণীরা। বাসন্তী রঙের শাড়ির সঙ্গে খোঁপায় গুঁজেছে টকটকে লাল শিমুল ফুল, মাথায় টায়রা আর হাতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন রঙের চুড়ি। বাসন্তী রঙের পাঞ্জাবি বা ফতুয়ায় সেজে এসেছে শিমুল বাগানে তরুণরাও। ফুলের সৌরভ আর পর্যটকদের ভিড়ে মেতে উঠেছে বাগানের চারপাশ।
তাহিরপুর উপজেলার মানিগাঁও গ্রামে ২ হাজার ৪ শতক জমিতে গড়ে উঠা শিমুল বাগানের প্রতিটি গাছে এসেছে নতুন ফুল। দেশের অন্যতম সৌন্দর্য যাদুকাটা নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা শিমুল বাগানে ভাষার মাস ফেব্রুয়ারিতে প্রথম সপ্তাহ থেকেই ফুল ফুটতে শুরু করে। লাল ফুলের মেলায় পুরো এলাকা হয়ে উঠেছে রক্তিম আভা।
ওপারে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে, মাঝে সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ যাদুকাটা নদী আর এপারে শিমুল বাগান। সব মিলেমিশে গড়ে তুলেছে প্রকৃতির এক অনবদ্য কাব্য। লাল পাপড়ি মেলে থাকা রক্তিম আভায় যেন পর্যটকদের মনে আলাদাভাবে স্থান করে নিয়েছে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা রাকিব ও পলাশ বলেন, আমরা ৫ বন্ধু শিমুল বাগানের সৌন্দর্য দেখতে গত বছর পরিকল্পনা করেছিলাম। এবার বাগানে আসতে পেরে এবং এর সৌন্দর্য দেখে সত্যিই মুগ্ধ। তবে সড়কের যে অবস্থা, বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে আমাদের।
বাগানের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম জয়নাল আবেদীনের ছেলে বাদাঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আফতাব উদ্দিন বলেন, তার বাবার পরিশ্রমের ফসল এই বাগানটি। তিনি ছিলেন বৃক্ষপ্রেমী। শুধু শিমুল বাগান ছাড়াও পাশের টাঙ্গুয়া হাওরে বিভিন্ন ধরনের গাছ রোপণ করে গেছেন।
যা এখন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা দেখতে আসেন। তিনি সরকারের কাছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য আবেদন জানিয়ে তাহিরপুরের টাংগুয়া হাওর, শিমুল বাগান, বারিক্কা টিলা, নীলাদ্রী লেক, যাদুকাটাসহ সব পর্যটন স্পটে পর্যটকের আসতে যাতায়াতের সুযোগ করে দিতে জোর দাবি জানান।
সান নিউজ/কর্ণবাবু দাস/এসএ