আসাফুর রহমান কাজল, খুলনাঃ
কচুর লতির চাষাবাদ করে অল্প দিনে ভাগ্য বদলাতে শুরু করেছে ডুমুরিয়ার শুভর। যে বয়সে আর দশটা ছেলে-মেয়েরা পড়ালেখা আর খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকে। তখন শুভর সময় কেটেছে পড়ালেখা, টিউশনি আর ক্ষুদ্র ব্যবসা করে।
নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও থেমে না থেকে মায়ের উৎসাহে এগিয়েছেন পথ। এখন তার স্বপ্ন চাকরী নয়, কৃষি ক্ষেত্রে সফল হবেন তিনি। যার মধ্য দিয়ে এলাকার মানুষের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চান শুভ।
ডুমুরিয়া সাজিয়াড়া এলাকায় জন্ম নেয় মোঃ মনিরুজ্জমান শুভ ৫ম শ্রেণীতে পড়াকালীন সময়ে বাবাকে হারান। সেই থেকে মা একটি বেসকরকারী সংস্থায় কাজ করে চালিয়েছেন দু’জনের সংসার।
মায়ের ইচ্ছায় শত কষ্টের মাঝেও এসএসসি পর্যন্ত পড়ালেখার পাশাপাশি করেন টিউশনি। এইচএসসিতে পড়ার সময় হলুদের বীজ, কচুর বীজ এবং রসুনের ব্যবসা শুরু করেন শুভ।
একসময় গড়ে তুলেন টার্কি খামার। এভাবে তিনি যে ব্যবসায় হাত দিয়েছেন সেখানেই আসে সফলতা। এখন তিনি বিএল কলেজে মাস্টার্সের ছাত্র। এরইমধ্যে বাড়ির পাশে ১৮ বিঘা জমি লিজ নিয়ে গত বছরের আগষ্ট-সেপ্টেম্বরে শুরু করেন লতিরাজ কচুর চাষাবাদ।
যশোর থেকে ১৮ হাজার চারা কেনেন তিনি। প্রতি বিঘায় সাড়ে ৪ হাজার চারা রোপন করেন শুভ। চারা রোপনের ৪৫ দিনের মাথায় গাছে লতি গজাতে শুরু করে। এর ঠিক ৭০ দিনের মাথায় লতি বিক্রি শুরু করেন তিনি।
৫বিঘা জমিতে করেছেন লতিরাজ কচুর চাষাবাদ। এখন প্রতি সপ্তাহে মণ প্রতি ৮শ টাকা দরে ৬ থেকে ৮মণ লতি বিক্রি করছেন তিনি। নতুন চারাও তৈরি করেছেন প্রায় ৩০ হাজার। বাকী ১০ বিঘা জমিতেও কচু চাষের প্রস্তুতি চলছে।
শুভ জানান, চাকরি করলে দুরে চলে যেতে হতো, তাই আর চাকুরী নয়। মায়ের পাশে থেকে কৃষি কাজ করবো। আমি কৃষক হতে চাই, শিক্ষিত কৃষক। কৃষি কাজে এলাকার দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান যোগাবো। আমি কখনো হতাশ হইনি। দৃঢ়ভাবে এগিয়েছি সামনের দিকে।
শুভর এই সফলতা দেখে ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন জানান, লতিরাজ কচু চাষাবাদ করে শুভ এখন সফল উদ্যোক্তা। অনেকের হয়তো সামর্থ আছে কিন্তু তারা কিছুই করতে পারে না। আবার শুভর মতো অনেকে রয়েছে, যাদের মনের বলই তাদেরকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
জানা গেল শুভর এ কৃষি উদ্যোগে উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা এবং পরামর্শ দেয়া হচ্ছে ।
সান নিউজ/সালি