খুলনা প্রতিনিধি:
রাস্তার দু’পাশে সরিষার হলুদ ফুলে ভরা দিগন্তজোড়া মাঠ। দেখলেই চোখ জুড়িয়ে আসে। মন চায় সে হলুদের মাঝে হারিয়ে যেতে। মাঠ ভরা সরিষা ক্ষেতের হলুদ মাঠে এক ফুল থেকে অন্য ফুলে মৌমাছিরা মনের আনন্দে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত। যেন হলুদের মাঠে কৃষকের স্বপ্ন খেলা করে।
সরিষা চাষ লাভজনক হওয়ায় চাষিরা এখন ঝুঁকে পড়ছে সরিষা চাষে। কেউবা সরিষার বীজ তৈরি করেও লাভবান হচ্ছেন।
সরিষা চাষে খরচ কম, অল্প শ্রমে ফলন হয় বেশি। সেই সঙ্গে বাজারে আগাম সরিষার দাম ভালো পাওয়ায় এ ফসলের আবাদ বাড়ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে কৃষকের সংখ্যা। আমন ফসল ঘরে তোলার পর স্বল্প সময়ে এটি লাভজনক হওয়ায় এখন অনেকেই সরিষা চাষের দিকে ঝুঁকছেন। তবে এবার খুলনা জেলায় সব থেকে বেশি পরিমানে আগাম সরিষা চাষ হয়েছে ডুমুরিয়ায়।
খুলনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, সরিষা চাষে কৃষকদের বিঘা প্রতি প্রায় ২হাজার টাকা খরচ হয়। আর উৎপাদিত সরিষা বিক্রি হয় প্রায় ৮ থেকে ৯ হাজার টাকায়। আমন ধান কাটার পর বোরো মৌসুমের পূর্বেই সরিষা চাষাবাদ করা যায়। আগাম সরিষা চাষে মাত্র ৬০-৭০ দিনের মধ্যেই কৃষক অনায়াসে ঘরে তুলতে পারেন সরিষা। আবাদকৃত জমির উর্বরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এসব জমিতে বোরো উৎপাদনও হয় বেশি।
জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার টিপনা ব্লকের কৃষক শেখ মনজুর জানান, এবার ২ একর জমিতে সরিষার চাষাবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। শুধু আশপাশের নয়, উপজেলার অনেকেই আমার কাছ থেকে সরিষার বীজ কিনে চাষাবাদ করেছেন। আমি প্রতি বছর বীজ উৎপাদন করছি। এক কেজি সরিষা ৪০-৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আর যদি বীজ তৈরি করে বিক্রি করি তাহলে প্রতি কেজি বিক্রি করতে পারি ১শ টাকা দরে।
একই উপজেলয়ার কর্ণিয়া এলাকার শেখ আবু হানিফ জানান, ধান কাটার পর নভেম্বর মাসে সরিষার বীজ বুনি। আর কয়েক দিন পর সরিষা কাটতে হবে। ফলন হয়েছে বেশ। আমি ৫০ শতক জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছি। ১৫শ থেকে ১৮শ টাকা খরচ হয়েছে আমার। আশা করছি এখান থেকে ২০-২২ হাজার টাকার সরিষা বিক্রি করতে পারবো। সরিষা ঘরে তুলে আবার সেই জমিতে আমরা বোরো চাষাবাদ করতে পারবো। ফলে জমি খালি থাকে না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন জানান, কৃষকের এই উদ্যোগকে আমরা ইতিবাচক হিসেবে দেখছি। জমির উর্বরতা ধরে রাখতে সরিষার আবাদে কৃষকদের উৎসাহিত করা হচ্ছে। এজন্য অধিকাংশ কৃষক এখন সরিষা আবাদের দিকে ঝুঁকছেন। তাছাড়া অল্প দিনে এবং অল্প পরিশ্রমে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারে কৃষকেরা।
সান নিউজ/সালি