শীত আসলে ঠান্ডা অনুভূত হয়, সঙ্গে থাকে কুয়াশা। কখনো বেশি আবার কখনো কম। আবার শৈত্যপ্রবাহের সঙ্গে শীত আর কুয়াশা যেন প্রতিযোগিতায় নামে। তখন থমকে যায় স্বাভাবিক জীবন। কিন্তু আমরা কি জানি শীত এলেই কুয়াশা পড়ে কেন?
না জানলে চলুন জেনে নেয়া যাক কি এর কারণ...
ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু স্তর শীতল থাকলে, বায়ুতে মিশে থাকা জলীয়বাষ্প ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র জলকণায় পরিণত হয়। ভূ-পৃষ্ঠ রাতে দ্রুত তাপ বিকিরণ করে ঠাণ্ডা হয়ে পড়লে, ভূ-পৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ু স্তর ঠাণ্ডা ও আর্দ্র হয়। এবং কুয়াশা তৈরির উপযুক্ত অবস্থার সৃষ্টি করে।
তবে, সমুদ্রের উপকূলভাগে, উষ্ণতর বায়ু, শীতল সমুদ্রের পনির সংস্পর্শে আসলেও কুয়াশার সৃষ্টি হয়।
আরো একটি সংজ্ঞা হলো, পানি তিন অবস্থায় থাকতে পারে। কঠিন, তরল, বায়বীয়। শীতকালে বাতাসে থাকা জলীয়বাষ্প ঠাণ্ডায় জমে বিন্দু বিন্দু পানির আকার ধারণ করে। এই পানির অণুগুলো জলীয় বাষ্পের চেয়ে ভারী হওয়ায় নিচে নেমে আসে যাকে কুয়াশা বলা হয়।
শীত প্রধান অঞ্চলে অতিরিক্ত ঠাণ্ডায় পানির অণুগুলো আরো ঘনীভূত হয়ে যায়। তখন ছোট ছোট বরফের সৃষ্টি করে। যাকে বালা হয় তুষার।
সাধারণত কুয়াশা হলো ভূমির সংস্পর্শে থাকা মেঘমালা। মেঘকেও আংশিকভাবে কুয়াশা বিবেচনা করা যায়। মেঘের যে অংশটুকু মাটির ওপরে বাতাসে ভাসমান থাকে তা কুয়াশা হিসেবে বিবেচিত নয়। তবে ভূমির উঁচু অংশের সংস্পর্শে থাকা মেঘমালাকে কুয়াশা বলা হয়।
কুয়াশা আর ধোঁয়াশার মধ্যে পার্থক্য হলো এদের ঘনত্বে। যা কিনা এদের ফলে সৃষ্ট দর্শনযোগ্যতার হ্রাস দ্বারা হিসাব করা হয়।
কুয়াশার কারণে দর্শনযোগ্যতা ১ কি.মি. এর কম হয়, যেখানে ধোঁয়াশা দর্শনযোগ্যতা ২ কি.মি. এর বেশি কমায় না। পৃথিবীর সর্বাধিক কুয়াশাচ্ছন্ন স্থান হলো নিউফাউন্ডল্যান্ডের গ্রান্ড ব্যাংকস। যেখানে উত্তর দিক থেকে আসা শীতল প্রবাহ ও দক্ষিণ দিক থেকে আসা অপেক্ষাকৃত উষ্ণ গালফ প্রবাহ মিলিত হয়।
সর্বাধিক কুয়াশাচ্ছন্ন ভূমি অঞ্চলের মধ্যে আছে পয়েন্ট রেয়স, ক্যালিফোর্নিয়া ও আর্জেন্টিনা, নিউফাউন্ডল্যান্ড ও লাব্রাডর। বছরের ২০০ দিনই কুয়াশায় ঢাকা থাকে এসব স্থান।
এমনকি শরৎ ও গ্রীষ্মের সময়ও উষ্ণ দক্ষিণ ইউরোপের নিম্নভূমি ও উপত্যকা অঞ্চলে ঘন কুয়াশা পড়ে থাকে।
সান নিউজ/সালি