ইমানুয়েল কান্ট (জার্মান Immanuel Kant ইমানুয়েল্ কান্ট্) এর জন্ম ২২ এপ্রিল ১৭২৪, অষ্টাদশ শতকের একজন বিখ্যাত প্রাশিয়ান জার্মান দার্শনিক।
কান্টের জন্ম পূর্ব প্রাশিয়ার কোনিগ্সবার্গে, যা বর্তমানে রাশিয়ার অন্তর্গত ও কালিনিনগ্রাদ নামে পরিচিত। কান্টকে আধুনিক ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী চিন্তাবিদ হিসাবে গণ্য করা হয়, এবং ইউরোপের Age of Enlightenment বা আলোকিত যুগের শেষ গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিক বলে অভিহিত করা হয়। তিনি তার "Critique of Pure Reason" (1781) বইটির জন্য স্বনামধন্য।
কান্ট জন্মগ্রহণ করেছিলেন এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারে। তার বাবা ছিলেন ঘোড়ার জিনের ব্যবসায়ী। বাবার নয় ছেলেমেয়ের মধ্যে কান্ট ছিলেন চতুর্থ । তার পরিবার ছিল প্রটেস্টান্ট খ্রিস্টান ধর্মমতের পাইটিস্ট শাখার অনুসারী।
কান্ট প্রথমে একটি পাইটিস্ট স্কুলে লেখাপড়া করেন। তিনি ১৩ বছর বয়সে মাকে হারান। ২১ বছর বয়সে বাবাকে হারান। স্কুলজীবনে কান্ট নিয়মানুবর্তিতা, সময়নিষ্ঠা, মিতব্যয়িতা ও কঠোর পরিশ্রমের অভ্যাস গড়ে তোলেন। স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থায় কান্ট ল্যাটিন ভাষায় তার দখলদারিত্ব দেখিয়ে সবাইকে বিস্মিত করে তোলেন। ওখান থেকে পরে ১৭৪০ খ্রিষ্টাব্দে ১৬ বছর বয়সে তিনি কোনিগ্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মতত্ত্ব বিভাগে ভর্তি হন। কিন্তু শীঘ্রই তিনি গণিতশাস্ত্র ও পদার্থবিজ্ঞানে আকৃষ্ট হয়ে ওঠেন। ল্যাটিন ও গ্রিক ভাষায় দখল নেয়া সহ গণিত, ভূগোল ও পদার্থবিদ্যায় ব্যাপক বিদ্যা অর্জন করেন। ১৭৪৬ সালে তার বাবা মারা যাওয়ার পর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়তে হয়। এর পর তিনি প্রায় ১০ বছর এক ধনী পরিবারে গৃহশিক্ষকতা করেন। এ সময় তিনি "যুক্তিবাদ" ও "প্রয়োগবাদ" এর মধ্যকার বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রশ্ন নিয়ে কিছু লেখা প্রকাশ করেন।
১৭৫৫ সালে কান্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসেন এবং ওই একই বছরে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। পরবর্তী ১৫ বছর তিনি সেখানকার প্রভাষক হিসেবে থাকা অবস্থায় দর্শনশাস্ত্রের উপর তার বিখ্যাত কিছু কাজ সম্পন্ন করেন। তিনি ১৭৭০ সালে কোনিগ্সবার্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসেবে অধিবিদ্যা ও যুক্তিবিদ্যার উপর অধ্যাপনা শুরু করেন। ১৭৮১ সালে কান্ট তার Critique of Pure Reason নামক গ্রন্থটি প্রকাশ করেন যা কিনা পশ্চিমা দর্শনশাস্ত্রের অন্যতম সেরা গ্রন্থ। এটিতে তিনি কারণ ও অভিজ্ঞতাসমূহ কীভাবে আমাদের চিন্তা ও বোধশক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত সে বিষয়টি ব্যাখ্যা করেন।
তিনি ১২ ফেব্রুয়ারি ১৮০৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন।