জেলা প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার উত্তর শাহাবাজ গ্রামের কৃষক শেখ শাহাবুদ্দিন বর্তমানে ড্রাগন চাষে সফলতা অর্জন করে নিজের জীবনের গতিপথ পরিবর্তন করেছেন।
আরও পড়ুন: ছুটির দিনে মুখর সোহরাওয়ার্দী
এমএ পাস করার পরও চাকরির পেছনে না ছুটে ২০০১ সালে পোল্ট্রি ব্যবসা শুরু করেন শাহাবুদ্দিন। তবে ২০১৯ সালে করোনাকালীন পোল্ট্রি খাতে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। পরবর্তীতে মানসিক অস্থিরতা কাটিয়ে নতুন করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেন তিনি।
শেখ শাহাবুদ্দিন বলেন, ড্রাগন গাছ রোপণের এক থেকে দেড় বছরের মধ্যেই গাছে ফুল আসে এবং ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্যে ফল হয়। প্রতি বছর এপ্রিল থেকে মে মাসে ফুল হয়, অক্টোবর থেকে নভেম্বর মাসেও ফল উত্তোলন সম্ভব। ১৮ মাস বয়সী একটি গাছ থেকে ৫-২৫টি ফল পাওয়া যায়। প্রাপ্তবয়স্ক একটি গাছ থেকে বছরে ১০০টি পর্যন্ত ফল উৎপাদন হয়। প্রতিটি গাছ মোট ২০ বছর পর্যন্ত ফল দেয়। প্রতিটি ড্রাগন ফলের ওজন ২০০ গ্রাম থেকে শুরু করে ১ কেজি পর্যন্ত হতে পারে।
বর্তমানে বাজারে প্রতি মণ ড্রাগন ফল ৮ হাজার টাকা দামে বিক্রি হয়। শাহাবুদ্দিনের বাগান থেকে প্রতি সপ্তাহে ২০-২৫ মণ ড্রাগন ফল বিক্রি হচ্ছে।
আরও পড়ুন: গাইবান্ধায় বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে সূর্যমুখী
শেখ শাহাবুদ্দিন শুধু নিজের জন্যই নয়, পুরো উপজেলায় ড্রাগন চাষের বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার স্বপ্ন দেখছেন। তার বাগানের বয়স ইতিমধ্যেই তিন বছর অতিক্রম করেছে এবং বাগানে প্রায় ১২ লক্ষাধিক টাকা বিনিয়োগ করেছেন তিনি। অল্প খরচে অধিক লাভের কারণে স্থানীয় অন্যান্য কৃষকেরাও ড্রাগন চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।
জেলা কৃষি কর্মকর্তা খোরশেদ আলম বলেন, সুন্দরগঞ্জের মাটি ও আবহাওয়া ড্রাগন চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসের পক্ষ থেকে আমরা নিয়মিত বাগান পরিদর্শন করে শাহাবুদ্দিনকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছি। আশা করা যাচ্ছে, তার মাধ্যমে গাইবান্ধার কৃষিতে ড্রাগন চাষের সম্ভাবনার সূচনা হবে।
এভাবে নিজের প্রচেষ্টায় স্বাবলম্বী হয়ে, শাহাবুদ্দিনের ড্রাগন বাগান শুধু অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিই এনে দেয়নি বরং উপজেলাবাসীর জন্যও একটি প্রেরণা হয়ে উঠেছে।
সান নিউজ/এএন