পরিবেশ

ভয়ঙ্কর রূপে মোখা

সান নিউজ ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটার গতির বাতাসের শক্তি নিয়ে আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশ উপকূলের সাড়ে আটশ কিলোমিটারের মধ্যে হাজির হওয়ায় জারি করা হয়েছে মহাবিপদ সংকেত।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশ সামুদ্রিক কার্যকলাপের কেন্দ্র

আবহাওয়া অফিস শুক্রবার (১২ মে) রাত ৯টার বুলেটিনে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৪ নম্বর স্থানীয় হশিয়ারী সংকেত নামিয়ে তার বদলে ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলেছে।

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ এই মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। এছাড়া মোংলা সমুদ্রবন্দরকে আগের মতই ৪ নম্বর স্থানীয় হশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: ৮ নম্বর মহাবিপদ সংকেত

এদিকে মোখার প্রভাবে কক্সবাজারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। বড় জলোচ্ছ্বাসের আশংকায় দলে দলে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটছে মানুষ। বিশেষ করে সেন্টমার্টিন থেকে ট্রলার নিয়ে টেকনাফ উপকূলে দলে দলে মানুষ আসছে। এরইমধ্যে সাগরে ২৮ ফুট উচ্চতার ঢেউ সৃষ্টি হয়েছে। বেড়েছে উপকূলীয় নদ-নদীর পানি। প্রতিনিয়ত বাড়ছে বাতাসের গতিবেগ। নিরাপদ আশ্রয়ে চলে এসেছে শত শত জাহাজ।

উপকূলীয় এলাকায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে ব্যাপক প্রস্তুতি, কোস্টগার্ডও প্রস্তুত রয়েছে। উপকূলবাসীকে নিরাপদ আশ্রয়ে নিতে চলছে মাইকিং। বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে নগদ অর্থ ও শুকনো খাদ্য বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। প্রস্তুতি রাখতে ডিসি-ইউএনওদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর ও ঝালকাঠিসহ উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রস্তুত রাখা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র ও মেডিকেল টিম। এদিকে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ নিয়ে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে দুর্যোগ সতর্কতা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা গ্লোবাল ডিজাস্টার অ্যালার্ট অ্যান্ড কো–অর্ডিনেশন সিস্টেম (জিডিএসিএস)।

আরও পড়ুন: জামিন পেলেন ইমরান খান

সংস্থাটি এই মুহূর্তে বিশ্বে চলমান দুর্যোগগুলোর মধ্যে ঘূর্ণিঝড় মোখাকে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করেছে। এটি অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় হিসেবে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। জিডিএসিএস হলো জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় কমিশনের একটি সহযোগিতা ফ্রেমওয়ার্ক। এটা বিশ্বব্যাপী দুর্যোগ মোকাবিলায় তথ্য সহযোগিতা দিয়ে থাকে।

শুক্রবার সংস্থাটির ওয়েবসাইটে ঘূর্ণিঝড় মোখা নিয়ে এসব তথ্য উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশ ও মিয়ানমার উপকূলে আঘাত হানতে পারে। এ সময় বাতাসের গতি সর্বোচ্চ ২০৪ কিলোমিটার পর্যন্ত উঠতে পারে। আর দুই মিটার (৬ ফুটের বেশি) পর্যন্ত জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।

আবহাওয়া অফিস বলেছে, ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

আর উপকূলীয় জেলা ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা এবং অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫ থেকে ৭ ফুট বেশি উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

আরও পড়ুন: পুকুরে ডুবে তিন শিশুর মৃত্যু

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টায় এ ঘূর্ণিঝড় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। সে সময় ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা বাড়ো হাওয়ার আকারে ১৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এ ঝড় আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর এবং ঘণীভূত হয়ে রোববার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।

বুলেটিনে বলা হয়েছে, কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় মোখার অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হতে পারে শনিবার সন্ধ্যা থেকেই। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ থাকায় উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পায়রা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেত (পুনঃ) ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত (পুনঃ) ৪ (চার) নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

আরও পড়ুন: বিচার বিভাগের মৃত্যু হয়েছে

উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ৮ (আট) নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

সান নিউজ/এনকে

Copyright © Sunnews24x7
সবচেয়ে
পঠিত
সাম্প্রতিক

সবজির বাজারে স্বস্তি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে কমেছে পেঁয়াজ, সবজি...

বড় দুর্ঘটনা থেকে বাঁচলেন পূজা 

বিনোদন ডেস্ক: ঢাকাই চিত্রনায়িকা ও মডেল পূজা চেরি ডজনখানেক ছব...

স্বামীকে মৃত দেখিয়ে মামলা, নারী আটক

জেলা প্রতিনিধি : সাভারের আশুলিয়ায় জীবিত স্বামীকে বৈষম্যবিরোধ...

বৈষম‌বিরোধী আন্দোলনে বেঁচে ফেরার আশা করেনি

নিজস্ব প্রতিবেদক: ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের পতন আন্দোল&zwnj...

ইসলামী ব্যাংকের সাথে হাব-এর মতবিনিময়

নিজস্ব প্রতিবেদক: ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি-এর উদ্যোগে হ...

নেতানিয়াহুকে গ্রেফতারে প্রস্তুত ৭ দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের...

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচনের পরামর্শ

নিজস্ব প্রতিবেদক : নির্বাচন সংস্কার কমিশনের সদস্য তোফায়েল আহ...

বাজার সহনশীল করার চেষ্টা করছি

নিজস্ব প্রতিবেদক : বাজারে নিত্যপণ্যের দাম কিছুটা কমে এসেছে জ...

কুকুর-বিড়াল হত্যায় ক্ষুব্ধ জয়া-সালমান

বিনোদন ডেস্ক: রাজধানীর মোহাম্মাদপুরের জাপান গার্ডেন সিটি এলা...

ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা

নিজস্ব প্রতিবেদক : শেখ হাসিনা জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে পালিয়ে...

লাইফস্টাইল
বিনোদন
sunnews24x7 advertisement
খেলা