বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধিসহ জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের উপকূলবর্তী যেসব দেশ সবচেয়ে অরক্ষিত ও হুমকির সম্মুখীন, বাংলাদেশ তার একটি। এরি মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, লবণাক্ততা সমস্যা, হিমালয়ের বরফ গলার কারণে নদীর দিক পরিবর্তন, বন্যা ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।
আরএর প্রভাব দেখা যাচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। সাম্প্রতি সময়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মাত্রাও অনেক অনেক বেড়ে গেছে। সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় 'বুলবুল' বাংলাদেশের দক্ষিণ অঞ্চলে আঘাত হানে। সুন্দরবন ঢাল হয়ে দেশকে রক্ষা করায় ক্ষতির পরিমান কিছুটা কম হয়েছে। এর আগেও বাংলাদেশ ঘূর্ণিঝড় আইলা, নার্গিস, সিডরসহ অনেক ঝড়ের সম্মুখীন হয়েছে।
এসব দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রস্তুত থাকতে হবে বাংলাদেশকে। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন কৌশল ও কর্ম পরিকল্পনা-বিসিসিএসএপি চূড়ান্ত করা হয়। উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ প্রথম এই ধরণের সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে। বিসিসিএসপি ২০০৯ এ বর্ণিত কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য ২০০৯-১০ অর্থবছরে সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড- সিসিটিএফ গঠন করা হয়।
উন্নত বিশ্বের দিকে না তাকিয়ে ফান্ড গঠনের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশেষভাবে প্রশংসিত করেছে বাংলাদেশকে। ট্রাস্ট ফান্ডের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হলো, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় স্থানীয় জনগণের সক্ষমতা বৃদ্ধি, জলবায়ু সহিষ্ণু প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও সম্প্রসারণ করার মাধ্যমে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন।
জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট ফান্ড গঠন ও এ বিষয়ে বিশেষ ভূমিকার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে জাতিসংঘ 'চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ' পুরস্কারে ভূষিত করেছে।
১৮১৮ থেকে ১৯১৮ পর্যন্ত গত একশ বছরে পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা বেড়েছে প্রায় এক ডিগ্রি সেলসিলায়। এখন থেকেই প্রটিটি দেশকে জলবায়ু রক্ষা নিজ নিজ দায়িত্ব পালন না করলে হুমকির মুখে পড়বে বিশ্বের জীববৈচিত্র। এর জন্য অধিক নজর দিতে হবে উন্নত বিশ্বকে। তবে উন্নত বিশ্বের দিকে না তাকিয়ে থেকে এখনি নিজ নিজ অবস্থান থেকে প্রতিটা দেশিকে দায়িত্বশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশবাদীরা।