সান নিউজ ডেস্ক : দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও নিকটবর্তী এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি অবশেষে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তে রূপ নিয়েছে। দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত পরিবর্তন করে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
আরও পড়ুন : রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর নির্দেশে বরখাস্ত সমীচীন হয়নি
রোববার (৮ মে) বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’-তে পরিণত হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছিল।
এটি রোববার সকাল ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৫৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৭৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২৫০ কিলোমিটার দক্ষিণে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে।
আরও পড়ুন : দেশ জুড়ে খুলেছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান
আরও জানানো হয়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্ক সংকেত নামিয়ে এর পরিবর্তে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সব মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে নিষেধ করেছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর।
আরও পড়ুন : সশস্ত্র হামলায় ১১ সেনা নিহত
ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, রোববার সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আগামী ১০ মে ঘূর্ণিঝড়টি দেশটির উত্তর অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা উপকূলের কাছাকাছি চলে যেতে পারে। এরপর এটি উত্তর ও উত্তর-পূর্ব দিকে বাঁক নিতে পারে। এরপর তা উড়িষ্যা উপকূলের দিকে যেতে পারে।
বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) অধীন জাতিসংঘের এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের সাগর তীরের ১২ দেশের (বাংলাদেশ, মিয়ানমার, ভারত, পাকিস্তান, মালদ্বীপ, থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওমান, কাতার, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরান, সৌদি আরব ও ইয়েমেন) আবহাওয়াবিদদের সংস্থা এস্কেপ ঘূর্ণিঝড়ের নাম দিয়ে থাকে। ‘অশনি’ নামটি শ্রীলঙ্কার দেওয়া, এর অর্থ ক্রোধ বা ক্ষ্যাপাটে।
আরও পড়ুন : ১১০ টাকা লিটারেই তেল বিক্রি
প্রসঙ্গত, নদী বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেতের অর্থ হচ্ছে, বন্দর এলাকা ক্ষণস্থায়ী ঝড়ো আবহাওয়ার কবলে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ঘন্টায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার গতিবেগের কালবৈশাখী ক্ষেত্রেও এই সংকেত প্রদর্শিত হয়। এই সংকেত আবহাওয়ার চলতি অবস্থার উপর সতর্ক নজর রাখারও তাগিদ দেয়।
অপরদিকে ২ নম্বর নৌ হুশিয়ারী সংকেতের অর্থ হচ্ছে, বন্দর এলাকা নিম্নচাপের সমতূল্য তীব্রতার একটি ঝড় যার গতিবেগ ঘন্টায় অনুর্দ্ধ ৬১ কিলোমিটার বা একটি কালবৈশাখী ঝড়, যার বাতাসের গতিবেগ ৬১ কিলোমিটার বা তারচেয়ে বেশি। নৌ-যান এদের যে কোনটির কবলে নিপতিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। ৬৫ ফুট বা তার কম দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট নৌ যানকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে হবে।
সান নিউজ/এইচএন